বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ যাওয়ার বিভিন্ন প্যাকেজ, খরচ ও নিয়মকানুন
মালদ্বীপ, পৃথিবীর বুকে যেন আরেক স্বর্গ। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও ভারত মহাসাগরের এই শান্ত, মনোরম দ্বীপরাষ্ট্র তার স্নিগ্ধ পরিবেশ ও প্রাচীন সমুদ্র সৈকত দিয়ে ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করে রেখেছে। স্বচ্ছ নীল রঙের পানি আর সাদা বালুতে ঘেরা এখানকার দ্বীপগুলো, যেগুলোকে ঘিরে আছে সাগরের অফুরন্ত জলরাশি। প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক এই বিস্ময়কর রুপ উপভোগ করতে আসেন।
এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ছোট এবং পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু মালদ্বীপ দেশটি শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় ৪৫০ মাইল পশ্চিম-দক্ষিণে ১২০০টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
আপনিও কি এই অপরুপ সৌন্দর্যের দেশ মালদ্বীপকে একবার হলেও ঘুরে দেখতে চান? তাহলে প্রয়োজন হবে একটি কমপ্লিট মালদ্বীপ ভ্রমণ গাইড। তাই আজকে আলোচনা করব বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ যাওয়ার বিভিন্ন প্যাকেজ, খরচ ও নিয়মকানুন নিয়ে।
মালদ্বীপ কেনো বিখ্যাত?
প্রতি বছর কেন এই দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় থাকে? মালদ্বীপ যাওয়ার আগে তাই চলুন একবার জেনে আসি, মালদ্বীপের এত জনপ্রিয়তা পাওয়ার রহস্য।
- প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: মালদ্বীপ তার প্রাচীন সাদা বালুর সৈকত, ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ওয়াটার এবং অত্যাশ্চর্য প্রবাল প্রাচীরের জন্য বিখ্যাত। মালদ্বীপে আছে অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ ও ট্রপিকাল ডাইভার্সিটি যা সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
- বিলাসবহুল রিসর্ট এবং ওভারওয়াটার বাংলো: মালদ্বীপ বিলাসবহুল পর্যটনের কেন্দ্রস্থল। এখানে অনন্য সব সার্ভিস এবং রিল্যাক্সিং ছুটির অভিজ্ঞতা দিতে আছে ব্যক্তিগত ওভারওয়াটার বাংলো। এই বাসস্থানগুলো অতিথিদের সরাসরি সমুদ্রে দেখার সুবিধা এবং অত্যাশ্চর্য পরিবেশ উপভোগ এর সুযোগ করে দেয়।
- ডাইভিং এবং স্নরকেলিং: মালদ্বীপে ডাইভিং এবং স্নরকেলিং ট্রাভেলারদের জন্য একটি অন্যতম আকর্ষণ। এখানে আছে অসম্ভব সুন্দর প্রবাল প্রাচীর, রঙিন মাছ, কচ্ছপ, মান্তা রশ্মি এবং এমনকি তিমি হাঙ্গর সহ বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক জীবনের আবাসস্থল। স্ফটিক-স্বচ্ছ জল এবং প্রচুর সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য উপভোগের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
- মালদ্বীপের সংস্কৃতি: মালদ্বীপের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। যা এর জনগণের ঐতিহ্য এবং ইতিহাসকে রিপ্রেজেন্ট করে। স্থানীয় দ্বীপ গুলো ঘুরে দেখা, বন্ধুত্বপূর্ণ স্থানীয়দের সাথে মেলামেশা, ঐতিহ্যবাহী বাজার ভ্রমণ, এবং মালদ্বীপের বিখ্যাত খাবার উপভোগ করার মতো একটিভিটির মাধ্যমে আপনি মালদ্বীপের সংস্কৃতিকে খুব কাছ থেকে অনুভব করতে পারবেন।
- ওয়াটার স্পোর্টস: মালদ্বীপে জেট স্কিইং, উইন্ডসার্ফিং, কায়াকিং এবং পালতোলা সহ বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টস একটিভিটির সুযোগ থাকে। শান্ত হ্রদ এবং স্থির বাতাস এইসব স্পোর্টসের জন্য একদম আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। যা অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের বিশেষভাবে আকর্ষিত করে।
- হানিমুন ডেসটিনেশন: মালদ্বীপ তার রোমান্টিক পরিবেশ, প্রাইভেসি এবং বিলাসবহুল রিসোর্টের কারণে হানিমুনের জন্য একটি জনপ্রিয় লোকেশন। নির্জন সমুদ্র সৈকত, অত্যাশ্চর্য সূর্যাস্ত, এবং অন্তরঙ্গ পরিবেশ এটিকে কাপলদের জন্য একটি ড্রীম ডেসটিনেশন বলা চলে।
- পরিবেশ সংরক্ষণ: মালদ্বীপ তার প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। এবং তারা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের স্থায়িত্ব ও সংরক্ষণের জন্য বেশ পরিচিত। তারা অনেক আগে থেকেই সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা স্থাপন করেছে এবং পর্যটনে পরিবেশ-বান্ধব প্র্যাকটিসকে বাস্তবায়ন করেছে। তাছাড়া নিয়মিত পরিবেশ সচেতনতা প্রচার করে যাচ্ছে।
এসব কারণেই মালদ্বীপ একটি টপ ক্লাস ভ্রমণ ডেসটিনেশন হিসাবে খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
কিভাবে মালদ্বীপ যাবেন?
আকাশ পথে:
বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে যাতায়াতের সবচেয়ে সুবিধাজনক এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হল বিমান। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স রয়েছে যাদের বাংলাদেশের প্রধান বিমানবন্দর যেমন ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে নিয়মিত ফ্লাইট আছে।

ফ্লাইটের সময়কাল প্রায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা। বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে এমন কিছু এয়ারলাইন্সের মধ্যে রয়েছে মালদ্বীপ, ফ্লাইম এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
কানেক্টেড ফ্লাইটের মাধ্যমে:
যদি সরাসরি ফ্লাইটগুলো এভেইলএবল না হয় বা আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনার সাথে ম্যাচ না হয়, আপনি কানেক্টেড ফ্লাইটগুলো বেছে নিতে পারেন৷ অনেক আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স দুবাই, দোহা বা কলম্বোর মত ট্রানজিট হাবের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে কানেক্টেড ফ্লাইট পাওয়া যায়।
সমুদ্রপথে:
যারা একটি ইউনিক এবং দুঃসাহসিক ভ্রমনের অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাদের জন্য বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে মালদ্বীপে ভ্রমণ একটি সুন্দর জার্নি হবে। যাইহোক, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে কোন সরাসরি ফেরি পরিষেবা এভেইলএবল নেই।
তবে আপনি ভারত বা শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে পৌঁছানোর জন্য চট্টগ্রাম বা মংলা বন্দর থেকে ফেরি বা ক্রুজ জাহাজ নিতে পারেন। সেখান থেকে, আপনি অন্য ফেরি নিতে পারেন বা মালদ্বীপে পৌঁছানোর জন্য কোনো অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বেছে নিতে পারেন।
ট্রাভেল এজেন্সি:
বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে পৌঁছানোর আরেকটি ঝামেলামুক্ত উপায় হল একটি ভ্রমণ প্যাকেজ বুক করা। অনেক ট্রাভেল এজেন্সি অল-ইন ওয়ান প্যাকেজ অফার করে যার মধ্যে রয়েছে ফ্লাইট, আবাসস্থল, খাবার এবং কখনও কখনও ট্যুর গাইড। এই প্যাকেজগুলো আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা করার সময়ে আপনার সময় এবং শ্রম বাঁচাতে পারে।
তবে আপনি যেভাবেই আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন না কেন, আগে বর্তমান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, ভিসার প্রয়োজনীয়তা এবং ফ্লাইটের সময়সূচী পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপের মধ্যে ফ্লাইট এবং পরিবহন বিষয়ে সবচেয়ে আপ-টু-ডেট তথ্যের জন্য এয়ারলাইন্স বা ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সাথে যোগাযোগ করুন।
মালদ্বীপে ভ্রমণ খরচ
মালদ্বীপে যাওয়া আসা করা এবং সেখানে থাকতে বিভিন্ন খরচ হবে। আর এখানে খাওয়াদাওয়া আর আনন্দ করার জন্যও গুনতে হবে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ। মালদ্বীপ ভ্রমণের মোট খরচের একটা সম্ভাব্য তালিকা দিলাম। খরচ গুলো ব্যক্তিগত ভ্রমনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
মালদ্বীপ আসা যাওয়া বিমান ভাড়া:
ফ্লাইট: বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে যাতায়াতের প্রাথমিক মাধ্যম হল বিমান। এয়ারলাইন, মৌসুম এবং আপনি কতটা আগে বুক করবেন তার উপর নির্ভর করে ফ্লাইটের খরচ পরিবর্তিত হতে পারে।
ঢাকা বা চট্টগ্রামের মতো বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালে পর্যন্ত ফিরতি ফ্লাইটগুলো ৪৩,০০০-৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে।
মালদ্বীপে থাকার খরচ :
১. রিসর্ট: মালদ্বীপ ব্যক্তিগত দ্বীপে অবস্থিত বিলাসবহুল রিসর্টের জন্য বিখ্যাত। এই রিসর্টগুলোতে থাকার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। অবস্থান, সুযোগ-সুবিধা এবং বছরের সময়ের মতো কারণগুলোর উপর ভিত্তি করে দাম পরিবর্তিত হয়। আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করে প্রতি রাতে ২,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা বা তার বেশি অর্থ খরচ হতে পারে।
২. গেস্টহাউস: বাজেট-সচেতন ভ্রমণকারীদের জন্য, গেস্টহাউসগুলো আরও সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন অফার করে। সাধারণত প্রতি রাতে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ হয়। গেসঠাউজে থাকলে স্থানীয় সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা এবং মালদ্বীপের বিভিন্ন লোকদের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ পাওয়া যায়।
মালদ্বীপে খাবার খরচ:
১. রিসর্টে ডাইনিং: রিসর্টগুলো প্রায়শই অলইন ওয়ান প্যাকেজ অফার করে যা তিনবেলা খাবার কভার করে। এতে করে আপনার খাবার খরচটাও কমবে। যাইহোক, আপনি যদি রিসর্টের মধ্যে রেস্তোরাঁয় খাবার বেছে নেন, তাহলে রেস্তোরাঁর ধরণ এবং আপনার মেনু পছন্দের উপর নির্ভর করে প্রতি খাবারে প্রায় ৩০০ থেকে ১০০০ দিতে হবে।
২. স্থানীয় রেস্তোরাঁ এবং রাস্তার খাবার: স্থানীয় রেস্তোরাঁয় খাওয়া বা রাস্তার খাবার একটি বাজেট ফ্রেন্ডলি ডিসিশন। স্থান ও ধরনের ওপর ভিত্তি করে করে স্থানীয় খাবারের জন্য জনপ্রতি ১০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
মালদ্বীপে বিভিন্ন একটিভিটির খরচ
১. ওয়াটার স্পোর্টস এবং ভ্রমণ: মালদ্বীপ তার পানির নিচের বিস্ময়কর সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। স্নরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং এবং প্রবাল প্রাচীর এক্সপ্লোর করার জন্য নৌকা ভ্রমণের মতো একটিভিটি বেশ জনপ্রিয়। ধরন, সময়কাল এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে খরচ প্রতি একটিভিটিতে ৫০০ থেকে ২০০০ বা তার বেশিও হতে পারে।
২. আইল্যান্ড-হপিং এবং এক্সপ্লোরিং: বিভিন্ন দ্বীপ অন্বেষণ, স্থানীয় সম্প্রদায়গুলো পরিদর্শন করা এবং মালদ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ ন্যূনতম খরচে করা যেতে পারে। দ্বীপগুলোর মধ্যে ফেরি বা স্পিডবোট স্থানান্তরের জন্য সাধারণত প্রতি ট্রিপে ৫০ থেকে ৩০০ খরচ হয়।
মালদ্বীপ ভ্রমন প্যাকেজ খরচ
এতক্ষণ আলোচনা করলাম ব্যক্তিগতভাবে মালদ্বীপ ভ্রমণের বিভিন্ন খরচ সম্পর্কে। তবে এবার জানাবো কম খরচে ঘোরাফেরার জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ সম্পর্কেও। হাই বাজেট থেকে শুরু করে লো বাজেটে ঘোরাফেলা করার জন্য বিভিন্ন ট্রাভেল এজোন্সি অথবা হোটেল বা রিসোর্ট গুলো যেসব অফার থাকে সেগুলোই আলোচনা করবো।
১. ইউএস-বাংলার মালদ্বীপ ভ্রমণ প্যাকেজ
মালদ্বীপে ২ রাত ও দিনের আকর্ষণীয় ট্যুর অফার করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এই প্যাকেজে মেইনল্যান্ড কিংবা আইল্যান্ড এর যে কোনো দ্বীপে আপনি নূন্যতম ৪৩, ৯৯০ টাকার মালদ্বীপ ভ্রমণ প্যাকেজ পাচ্ছেন। এই প্যাকেজে থাকছে-
- ঢাকা টু মালদ্বীপ, এবং মালদ্বীপ টু ঢাকা রিটার্ন এয়ার টিকিট, সাথে দুই রাত এবং তিন দিন হোটেলে থাকার সুবিধা
- এখানের বুফে ব্রেকফাস্ট, মালে এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে অত্যাধুনিক স্পিডবোটে পিকআপ, ড্রপসহ, সার্বক্ষনিক ফ্রি ওয়াইফাই এর সুবিধা।
- এই প্যাকেজ গুলোতে টুইন শেয়ার করা যাবে। আর টুইন শেয়ারিং ছাড়াও একজন গেস্ট কিংবা শিশুদের জন্যও রয়েছে প্রচুর অফার প্যাকেজ।
২. মালদ্বীপের প্যারাডাইজ আইল্যান্ড রিসোর্টে ৮৯ হাজার ৯৯০ টাকার প্যাকেজ
এটি একটি সুপরিচিত আইল্যান্ড, যা সব পর্যটকদের ভালো লাগার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। এই আইল্যান্ডে ন্যূনতম ৮৯ হাজার ৯৯০ টাকায় একটি শেয়ারিং প্যাকেজ অফার করছে ইউএস বাংলা। শেয়ারিং সিস্টেমে এখানে বিচ ভিলায় ফুলবোর্ড, এয়ারপোর্ট-রিসোর্ট, এয়ার টিকিট, ট্রান্সফার সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। এখানে খাওয়া দাওয়া আপনি হোটেল থেকে করতে পারবেন সাথে হোটেলের সমস্ত সার্ভিসও ফ্রী থাকবে।
৩. সি-প্লেনে ১ লাখ ১ হাজার ৯৯০ টাকার মালদ্বীপ ট্যুর প্যাকেজ
এই প্যাকেজে রিসোর্ট-এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার সহ ন্যূনতম ১০১৯৯০ টাকায় শেয়ারিং অফারে বিচ ভিলায় সান আইল্যান্ডে ফুলবোর্ড প্যাকেজ চালু করেছে ইউএস-বাংলা। এইখানে গেলে আপনার পর্যটক মনের সব টুকু ইচ্ছে পুরন হবে। কারণ এ প্যাকেজ থাকবে থাকা খাওয়ার সমস্ত সুবিধা থেকে শুরু করে, হোটেলের সব রকম সার্ভিসের একসেস, বিভিন্ন স্পোর্টস, ওয়াটার বোট, ডাইভিং এর মত একটিভিটির সুযোগ। এখান থেকে ভিউ গুলোও আসবে একদম মনের মত।
আর মালদ্বীপের এই আকর্ষণীয় ভ্রমণ প্যাকেজগুলো শুরু হয়েছে ৭ মে থেকে। এবং ২১ জুন ২০২৩ পর্যন্ত এগুলো এভেইলএবল থাকবে। প্যাকেজ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ও বুকিং করতে যোগাযোক করুন –
- ০১৭৭৭-৭৭৭৮৮১,
- ০১৭৭৭-৭৭৭৮৮২,
- ০১৭৭৭-৭৭৭৮৮৩।
৪. ডিকভার হলিডেস মালদ্বীপ ট্যুর প্যাকেজ
ঢাকা-মালদ্বীপ-ঢাকা, চারদিন, তিন রাতের প্যাকেজ টি বর্তমানে তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্যাকেজ। এই প্যাকেজে যা যা থাকছে:
- ৩ রাত থাকার সুবিধা
- হোটেলে বুফে ব্রেকফাস্ট
- রুম সার্ভিস
- মালে এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল পর্যন্ত ফ্রী ট্রান্সপোর্ট।
এই প্যাকেজ থেকে আপনাকে Season Holidays / Ripple Beach Inn at Hulhumale বা এরকম বাজেটের কিছু হোটেল অফার করা হবে।
যে হোটেলই থাকছেন না কেন, খরচ ৩৮,০০০ ই থাকবে। তবে পার্সোনাল খরচ এবং ভিসার খরচ সম্পূর্ণভাবে আপনার নিজের বহন করতে হবে।
৫. Gozyaan মালদ্বীপ ভ্রমণ প্যাকেজ
Kaani Palm Beach Hotel – 2 nights and 3 Days প্যাকেজটি বর্তমানে এভেইলএবল থাকবে। এই প্যাকেজে যা যা থাকছে-
- প্রথমত এই হোটেল থেকে অনেক সুন্দর সি ভিউ পাওয়া যায়। আর এর আসে পাশের প্রকৃতি অসম্ভব সুন্দর।
- তাছাড়া এয়ারপোর্ট থেকে Kaani Palm Beach পর্যন্ত ফ্রী ট্রান্সপোর্ট।
- রাউন্ড ট্রিপ, হেয়ার স্যালুন, ডাইভিং, ম্যাসাজ, সাম্বা স্পা এর সুবিধা
- এছাড়া আছে ফ্রী লন্ড্রী ও ২৪ ঘন্টা ওয়াইফাই সুবিধা।
- আরো থাকছে আউটডোর পুল
- রিসপেশন হল, কনভোকেশন সেন্টার, ওয়েডিং সার্ভিস, ট্যুর গাইড ইত্যাদি।
এই প্যাকেজে খরচ পার পারসন ২৩,৫০০ টাকা। তবে ভিসার খরচ, ব্যক্তিগত খরচ, লেট ফ্লাইট খরচ এসব আপনার নিজের দিতে হবে।

মালদ্বীপে থাকার ব্যবস্থা ও খরচ
বিভিন্ন রকম প্যাকেজ বাদেও, নিজ দায়িত্বে মালদ্বীপ গেলে কোথায় থাকবেন? কোথায় খাবেন? এর জন্য কিছু বাজেট ফ্রেন্ডলি এবং লাক্সারি দুই ধরনের হোটেল ও রিসোর্ট সার্ভিস সম্পর্কে আলোচনা করলাম। এখানে মালদ্বীপের কয়েকটি জনপ্রিয় হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে যা বাংলাদেশী পর্যটকদের পার্ফেক্ট:
১. আদারান প্রেস্টিজ ভাদু:
খরচ : প্রতি রাতে ৭০০০ টাকা থেকে শুরু।
ভিউ: ওভার-ওয়াটার ভিলা যেখানে সরাসরি বীচ অ্যাক্সেস রয়েছে। সাথে ভারত মহাসাগরের অত্যাশ্চর্য দৃশ্যও দেখতে পারবেন।
সুবিধা: ব্যক্তিগত প্লাঞ্জ পুল, স্পা পরিষেবা, ওয়াটার স্পোর্টস, খেলা, একাধিক ডাইনিং, এবং বিনোদনমূলক কার্যকলাপের ব্যাবস্থা
যোগাযোগের তথ্য:
- ফোন: +960 664 3971,
- ইমেল: [email protected],
- ওয়েবসাইট: www.adaaran.com/prestigevadoo
২. সান আইল্যান্ড রিসোর্ট এবং স্পা:
খরচ : প্রতি রাতে ২৫০০ থেকে শুরু।
ভিউ: অসাধারণ প্রকৃতি এবং সাদা বালুকাময় সৈকতের সুন্দর দৃশ্য, সমুদ্র সৈকত এবং ওভার-ওয়াটার ভিলা।
সুবিধা: একাধিক ডাইনিং অপশন, স্পা এবং ওয়েলনেস সেন্টার, সুইমিং পুল, ওয়াটার স্পোর্টস এবং একটি বাচ্চাদের ক্লাব।
যোগাযোগের তথ্য:
- ফোন: +960 668 0088,
- ইমেল: [email protected]
- ওয়েবসাইট: www.sunislandmaldives.com
৩. প্যারাডাইস আইল্যান্ড রিসোর্ট এবং স্পা:
খরচ: প্রতি রাতে ৩০০০ টাকা থেকে শুরু।
ভিউ: সমুদ্র সৈকত এবং ওভার-ওয়াটার ভিলা যা ভারত মহাসাগর এবং আদিম সৈকতের মনোরম দৃশ্য।
সুবিধা: একাধিক রেস্তোরাঁ এবং বার, স্পা এবং ওয়েলনেস সেন্টার, ওয়াটার স্পোর্টস, ডাইভিং সেন্টার এবং একটি গল্ফ কোর্স।
যোগাযোগের তথ্য:
- ফোন: +960 664 0013,
- ইমেল: [email protected]
- ওয়েবসাইট: www.paradiseislandmaldives.com
৪. Oblu by Atmosphere
খরচ : প্রতি রাতে 4500 টাকা থেকে শুরু।
ভিউ: বালুকাময় সৈকত এবং বীচের সরাসরি অ্যাক্সেস ও বিচফ্রন্ট ভিলা।
সুবিধা: অলইনওয়ান ডাইনিং, স্পা পরিষেবা, জল ক্রীড়া, স্নরকেলিং এবং ডাইভিং কার্যকলাপ, এবং একটি ফিটনেস সেন্টার।
যোগাযোগের তথ্য:
- ফোন: +960 400 4500,
- ইমেল: [email protected]
- ওয়েবসাইট: www.oblu-helengeli.com
৫. কুরুম্বা মালদ্বীপ:
খরচ: প্রতি রাতে ৩৫০০ টাকা থেকে শুরু।
ভিউ: বিচফ্রন্ট এবং গার্ডেন ভিলাগুলো চারপাশে জমকালো গ্রীষ্মমন্ডলীয় বাগান বা সরাসরি সৈকত দেখার সুযোগ ।
সুবিধা: একাধিক রেস্তোরাঁ এবং বার, স্পা ট্রিটমেন্ট, ওয়াটার স্পোর্টস, ডাইভিং সেন্টার এবং সন্ধ্যায় বিনোদন।
যোগাযোগের তথ্য:
- ফোন: +960 664 2324,
- ইমেল: [email protected]
- ওয়েবসাইট: www.kurumba.com
তবে উল্লিখিত প্রাইসগুলো সিজনের ভিত্তিতে পরিবর্তন সাপেক্ষে।
মালদ্বীপের আরো কিছু হোটেল ও রিসোর্ট হল-
- Soneva Jani
- Velaa Private Island
- Six Senses Laamu
- Gili Lankanfushi
- One&Only Reethi Rah
- Four Seasons Resort Maldives at Landaa Giraavaru
- Anantara Kihavah Maldives Villas
- Amilla Fushi
- Cheval Blanc Randheli
- Angsana Ihuru ইত্যাদি।
তবে সবশেষ আপ-টু-ডেট তথ্যের জন্য এবং রিজার্ভেশন করার জন্য সরাসরি হোটেল/রিসর্টে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেব।
মালদ্বীপের ভিসা পাওয়ার উপায়
মালদ্বীপের ভিসা পেতে হলে যেসব জিনিস রেডি থাকতে হবে:
পাসপোর্ট: নিশ্চিত করুন যে আপনার পাসপোর্ট মালদ্বীপে প্রবেশের তারিখ থেকে কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য বৈধ।
আবেদনপত্র: অনলাইন ভিসা আবেদনপত্র সঠিকভাবে পূরণ করুন এবং জমা দিন।
সাপোর্টিং ডকুমেন্টস: আপনার পাসপোর্টের বায়োডাটা পৃষ্ঠার একটি কপি, সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং নিশ্চিত রিটার্ন এয়ার টিকেট যুক্ত করুন।
আবাসন বিবরণ: হোটেল রিজার্ভেশন বা প্রযোজ্য হলে স্পনসর থেকে ইনভাইটেশন কার্ড সহ মালদ্বীপে আপনার থাকার তথ্য গুলো দিন।
পর্যাপ্ত তহবিল: মালদ্বীপে আপনার থাকার সময় আপনার খরচগুলো কভার করার জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের প্রমাণ দেখান।
মালদ্বীপ ভিসা আবেদন পদ্ধতি:
বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ ভিসার জন্য আবেদন করতে, এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন:
- অফিসিয়াল মালদ্বীপ ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট বা বাংলাদেশে মালদ্বীপের দূতাবাসের ওয়েবসাইট দেখুন।
- প্রয়োজনীয় বিবরণ সহ অনলাইন ভিসা আবেদন ফর্মটি পূরণ করুন।
- উপরে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস যুক্ত করুন।
- একটি বৈধ ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে ভিসা ফি প্রদান করুন।
- আপনার আবেদন জমা দিন এবং একটি রেসপন্স এর জন্য অপেক্ষা করুন.
মালদ্বীপ ভিসার ধরন এবং খরচ:
মালদ্বীপে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য দুটি প্রধান ধরনের ভিসা পাওয়া যায়:
ট্যুরিস্ট ভিসা: বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য একটি ট্যুরিস্ট ভিসার মূল্য প্রায় ১২০০ টাকা। এই ভিসা মালদ্বীপে সর্বোচ্চ ৩০ দিন থাকার অনুমতি দেয়।
আগমনের ভিসা: বাংলাদেশী নাগরিকদের মালদ্বীপের অভিবাসন কাউন্টারে আগমনের উপর ভিসা পাওয়ার অপশনও রয়েছে। আগমনের ভিসার খরচও প্রায় ১০০০-১২০০ টাকা, এটি নগদে দিতে হবে।
ভিসা অন অ্যারাইভাল প্রসেস:
আপনি যদি এই অপশনটি বেছে নেন, মালদ্বীপে পৌঁছানোর পরে এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন:
- আপনার ফ্লাইটে বা ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রদত্ত আগমন কার্ডটি পূরণ করুন।
- ভিসা পেমেন্ট কাউন্টারে যান এবং টাকা বা মালদ্বীপের রুফিয়া (স্থানীয় মুদ্রা) এ ভিসা ফি প্রদান করুন।
- আপনার পাসপোর্ট, সম্পূর্ণ আগমনের কার্ড এবং ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে বাসস্থানের প্রমাণ উপস্থাপন করুন।
- ইমিগ্রেশন অফিসার ভিসা দিয়ে আপনার পাসপোর্টে স্ট্যাম্প দিবে, আপনাকে মালদ্বীপে প্রবেশের অনুমতি দেবে।
ভিসা সংগ্রহ:
আপনি যদি অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করেন, আপনি ইমেলের মাধ্যমে একটি ইলেকট্রনিক ভিসা অনুমোদন মেসেজ পাবেন। মালদ্বীপে ভ্রমণ করার সময় আপনার পাসপোর্টের সাথে এই অনুমোদন মেসেজের একটি প্রিন্টআউট সাথে রাখুন।
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের দূতাবাসের তথ্য
মালদ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস: মালদ্বীপের রাজধানী মালে তে অবস্থিত। একজন বাংলাদেশী সিটিজেন হিসেবে আপনি এখান থেকে বিভিন্ন রকম সাপোর্ট পাবেন।
যেকোনো সাহায্য পেতে সরাসরি তাদের দূতাবাসে চলে যেতে পারেন
তাছাড়া যোগাযোগ করতে পারেন +960 332-0859 নম্বরে।
বাংলাদেশে অবস্থিত মালদ্বীপের দূতাবাস: এটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা তে অবস্থিত। পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত জটিলতা, লিগ্যাল ইস্যু ইত্যাদি বিষয়ে সেবা পেতে সরাসরি তাদের অফিসে ভিজিট করুন বা যোগাযোগ করুন- 02-9882199
মালদ্বীপের কিছু দর্শনীয় স্থান
মালদ্বীপ হল একটি অত্যাশ্চর্য ট্রপিকাল প্যারাডাইস যা ভারত মহাসাগরে 26টি প্রবালপ্রাচীর এবং 1,000টিরও বেশি প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত। মালদ্বীপে কিছু বিশেষ স্থান রয়েছে:
Baa Atoll (অবস্থান: উত্তর মালদ্বীপ)
Baa Atoll হল একটি ইউনেস্কো বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ যা তার ব্যতিক্রমী জীববৈচিত্র্য এবং আদিম সামুদ্রিক জীবনের জন্য পরিচিত। এটি প্রাণবন্ত প্রবাল প্রাচীর এবং মান্তা রশ্মি এবং তিমি হাঙ্গরের সাথে দেখা করার সুযোগ দেয়। সাথে চমৎকার ডাইভিং এবং স্নরকেলিংয়ের সুযোগ তো থাকছেই। প্রবাল প্রাচীরটিতে কিছু বিলাসবহুল রিসর্ট ও পেয়ে যাবেন যা রিল্যাক্সেশন এবং এডভেঞ্চারের জন্য একদম পার্ফেক্ট বলা চলে।
মালে (অবস্থান: কাফু অ্যাটল)
মালে হল মালদ্বীপের রাজধানী শহর, যা কাফু অ্যাটলে অবস্থিত। একটি ছোট দ্বীপ হওয়া সত্ত্বেও, বিভিন্ন একটিভিটি এবং সংস্কৃতির জন্য খুব পরিচিত। এখানে এসে আপনি সরু রাস্তাগুলো ঘুরে বেড়ানো, স্থানীয় বাজারগুলো দেখা এবং মালে ফ্রাইডে মসজিদ এবং রাষ্ট্রপতি প্রাসাদের মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলো আবিষ্কার করারকাজ করে সময় কাটাতে পারবেন।
আর হুলহুমলে ব্রিজ থেকে মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না যেন।
হানিফারু উপসাগর (অবস্থান: বাএ অ্যাটল)
হানিফারু উপসাগর বা এটলের মধ্যে একটি বিখ্যাত সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা। এটি মান্তা রশ্মি এবং তিমি হাঙরের মৌসুমী সমাবেশের জন্য বিখ্যাত। এটি স্নরকেলার এবং ডুবুরিদের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান।
মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষা ঋতুতে, প্ল্যাঙ্কটনের ফুলগুলো এই মৃদু দৈত্যদের আকর্ষণ করে, যা সত্যিকার অর্থে একটি মন্ত্রমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা দেয়।
আরি অ্যাটল (অবস্থান: পশ্চিম মালদ্বীপ)
আরি অ্যাটল ডাইভিং প্রেমীদের জন্য আরেকটি অবিশ্বাস্য গন্তব্য। এটির দর্শনীয় প্রবাল গঠন, সামুদ্রিক জীবনের সমৃদ্ধ বৈচিত্র্য এবং নতুন এবং অভিজ্ঞ ডাইভার উভয়ের জন্য উপযুক্ত ডাইভ সাইটগুলোর একটি।
এগুলো মালদ্বীপে দেখার মতো অনেক সুন্দর জায়গার কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। এই দ্বীপগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আদিম সৈকত এবং শ্বাসরুদ্ধকর জলের নীচের বায়োডাইভারসিটির এক অনন্য সমন্বয়।
মালদ্বীপে কেনাকাটা করার জন্য শপিংমল সমূহ
মাজেধী মাগু, মালে: মাজেধী মাগু হল রাজধানী মালে শহরের একটি জনপ্রিয় রাস্তা। এটি তার অসংখ্য দোকান ও বুটিকের জন্য পরিচিত।
এসটিও ট্রেড সেন্টার, মালে: মালেতে আমেনি মাগুতে অবস্থিত। এসটিও ট্রেড সেন্টার একটি বহুতল শপিং কমপ্লেক্স যেখানে বিভিন্ন দোকান রয়েছে। এটি পোশাক, গৃহস্থালী সামগ্রী, প্রসাধনী এবং ইলেকট্রনিক্স সহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করে।
সেন্ট্রো মল, হুলহুমলে: সেন্ট্রো মল মালের কাছে একটি কৃত্রিম দ্বীপ হুলহুমেলে অবস্থিত। এটি একটি আধুনিক শপিং কমপ্লেক্স যেখানে একটি সুপারমার্কেট, খুচরা আউটলেট, ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে।
দ্বীপ বাজার, মালে: দ্বীপ বাজার হল স্কোয়ারের কাছে অবস্থিত মালের একটি জনপ্রিয় শপিং মল। এটি পোশাক, আনুষাঙ্গিক, হস্তশিল্প, স্যুভেনির এবং স্থানীয় শিল্পকর্ম সহ বিস্তৃত পণ্যের জন্য বিখ্যাত।
মুনি এন্টারপ্রাইজ, মালে: মুনি এন্টারপ্রাইজেস মালে একটি সুপরিচিত শপিং সেন্টার
এটি অর্কিড মাগুতে অবস্থিত। এটিতে একাধিক স্টোর রয়েছে যেখানে আপনি পোশাক, আনুষাঙ্গিক, ইলেকট্রনিক্স এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্য খুঁজে পেতে পারেন।
অলিম্পাস, মালে: অলিম্পাস হল একটি শপিং মল যা মালে আমির আহমেদ মাগুতে অবস্থিত। এটি পোশাক, জুতা, আনুষাঙ্গিক এবং ইলেকট্রনিক্স সহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করে।
মালদ্বীপের জনপ্রিয় কিছু খাবার
একজন পর্যটক হিসাবে মালদ্বীপে গিয়ে কি কি নতুন খাবার ট্রাই করবেন তার একটি তালিকা-
গারুধিয়া: এই ঐতিহ্যবাহী খাবার, মালদ্বীপের মাছের ঝোল টুনা, নারকেল এবং সুগন্ধি মশলা দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি মেইনলি চাল, চুন, মরিচ এবং পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
মাস হুনি: একটি জনপ্রিয় মালদ্বীপের রাতের খাবার। মাস হুনিতে গ্রেট করা নারকেল, পেঁয়াজ এবং মরিচের সাথে মিশ্রিত স্মোকড টুনা থাকে।
রিহাকুরু: এই পুরু এবং সুস্বাদু মাছের পেস্টটি মালদ্বীপের একটি প্রধান খাবার। মাছ সিদ্ধ করে তৈরি করা হয় যতক্ষণ না এটি ঘন একটা পেস্টে পরিণত হয়।
গারুধিয়া ফিহুনু: ভাজা মাছ, যেমন টুনা বা রিফ ফিশ, স্থানীয় এবং দর্শনার্থীদের মধ্যে একইভাবে প্রিয়। মশলা দিয়ে মেরিনেট করা এবং খোলা শিখায় রান্না করা। এটি সাধারণত ভাপানো চাল, চুন এবং মরিচের সসের সাথে পরিবেশন করা হয়।
মাশুনি: আরেকটি রাতের খাবার, মাশুনি হল স্মোকড টুনা, গ্রেট করা নারকেল, পেঁয়াজ এবং মরিচের মিশ্রণ।
মালদ্বীপের কারি: মালদ্বীপে মুরগি, মাছ এবং উদ্ভিজ্জ খাবার সহ সুগন্ধযুক্ত কারিগুলোর একটি এটি। এই তরকারিগুলোতে মশলা, নারকেলের দুধ এবং স্থানীয় উপাদানগুলোর একটি পার্ফেক্ট মিশ্রণ রয়েছে
মালদ্বীপ ভ্রমনে সতর্কতা
মালদ্বীপ ভ্রমণের সময় সে দেশের আইন কানুন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, টুরিস্টদের সাথে প্রতারনা নিয়ে সতর্ক থাকা বেশ জরুরি। এজন্য-
- পাসপোর্ট ও ভিসার ডকুমেন্টস নিজের সাথে রাখুন, যার ভ্যালিডিটি কমপক্ষে ছয়মাস থাকবে।
- যাওয়ার আগে তাদের ভিসা রিকোয়ারমেন্ট, রাজনৈতিক পরিস্থিতি জেনে তারপর যাবেন।
- টুরিস্টদের জন্য অ্যালকোহল ক্যারি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, তাই এ ব্যাপারে সচেতন হবেন।
- অপরিচিত কাউকে আপনার লোকেশন, ভ্রমণ ডিটেলস ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানাবেন না।
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের দ্বীপভূমি মালদ্বীপ ঘুরে আসতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল টি নির্দ্বিধায় ফলো করুন। মালদ্বীপ যাওয়া থেকে শুরু করে, থাকা, খাওয়া, এনজয় করা এবং নিরাপদে যাত্রা করার সকল তথ্য আজকে তুলে ধরেছি। আশা করি আপনার মালদ্বীপ ভ্রমণ ঝামেলমুক্ত, আনন্দময় হবে।