ভারতে কিডনি রোগের চিকিৎসা | কলকাতার সেরা কিডনি হাসপাতাল তালিকা
সুস্থতাই সকল সুখের মূল কথাটি সম্পর্কে আমাদের সকলেরই ধারনা রয়েছে। অসুস্থতা থেকে সবাই মুক্তি পেতে চায়। তাইতো বর্তমানে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্যে মানুষ এখন বিদেশমুখীও হচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এটি নতুন কোন বিষয় নয়। রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে উচ্চমানের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার জন্যে বহু মানুষ প্রতিদিনই প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাচ্ছেন।
বর্তমানে কিডনি জনিত রোগে আক্রান্তের পরিমান দিন দিন বেড়ে চলছে। আধুনিক প্রযুক্তির উন্নত মানের চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশে না থাকার কারণে মানুষ ভারতের বিশেষজ্ঞদের কাছেই ছুটে চলছেন।
আপনিও যদি ভারতে কিডনি রোগের চিকিৎসা নিতে যাবেন ভাবছেন কিন্তু বুঝতে পারছ না কিভাবে যাবেন, খরচ কেমন পরবে বা কলকাতা ও চেন্নাইয়ের কিডনি হাসপাতাল কোনগুলো। তাছাড়া, কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার আগে কি কি চেকাপ করা লাগে, কি কি ডকুমেন্ট লাগবে, কত দিন থাকা লাগতে পারে, খরচ কেমন হবে ইত্যাদি নানা বিষয়ে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
- আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে কিডনি রোগের হাসপাতাল
আর্টিকেলটিতে উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার সাথে সাথে চলুন জেনে আসি ভারতের কিডনি রোগের চিকিৎসা সম্পর্কিত বিস্তারিত প্রয়োজনীয় তথ্য। যদি আপনি ভারতে কিডনি চিকিৎসার জন্য যেতে চান তবে আশা করা যায় আজকের লেখাটি আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ গাইডলাইন প্রদান করে সাহায্য করবে।
কলকাতার সেরা কিডনি হাসপাতাল তালিকা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অর্থাৎ কলকাতায় বর্তমানে কিডনি জনিত হাসপাতালের পরিমান দিন দিন বেড়েই চলছে। আপনি খুব সহজে বাসে ট্রেনে গিয়েই কলকাতার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে কিডনির চিকিৎসা নিতে পারছেন ।
আপনি যদি খুঁজে না পেয়ে থাকেন যে কলকাতার কোন হাসপাতালগুলো কিডনি জনিত রোগের চিকিৎসা প্রদান করতে থাকে তবে, আপনাদের কষ্ট লাঘব করতে কলকাতায় যে সব সেরা কিডনি হাসপাতাল রয়েছে তার তালিকা, ঠিকানাসহ বেশ কিছু অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নাম দেয়া হলো-
১। এএমআরআই হাসপাতাল (AMRI hospital)
ঠিকানা: ব্লক-এ, এসকেম- এল১১, পি-৪ এবং ৫, গারিয়াহাট রোড, ওয়ার্ড নং ৯০, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।
২। অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল (Apollo Multispeciality Hospital)
ঠিকানা: ৫৮,ক্যানাল সার্কুলার রোড, কাঁনকুড়গাছি, কলকাতা, পশ্চিমবাংলা
৩। রুবি জেনারেল হাসপাতাল (Ruby General Hospital)
ঠিকানা: ৫৭৬, আনন্দপুর মেইন রোড, গোলপার্ক, কাসবা, সেক্টর ১, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।
৪। ফোর্টিস হাসপাতাল (Fortis Hospital)
ঠিকানা: ৭৩০, আনন্দপুর, ই. এম. বাইপাস রোড, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।
৫। কলকাতা মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (Calcutta Medical Research Institute)
ঠিকানা: ৭, ২, ডায়মন্ড হারবর রোড, কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ।
৬। মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল (Medical College and Hospital)
ঠিকানা: ৮৮, কলেজ স্ট্রিট, পশ্চিমবঙ্গ কলকাতা৷
৭। পিয়ারলেস হাসপাতাল (Peerless Hospital)
ঠিকানা: শহীদ স্মৃতি কলোনি,পশ্চিমবঙ্গ ৭০০০৯৪, কলকাতা।
৮। সিএমআরআই হাসপাতাল (CMRI Hospital)
ঠিকানা : আলিপুর, পশ্চিমবঙ্গ ৭০০০২৭, কলকাতা
৯। কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতাল সল্টলেক (Columbia Asia Hospital Salt Lake)
ঠিকানা : আইবি-১৯৩, সেক্টর – ৩, বিধাননগর, পশ্চিমবঙ্গ ৭০০০৯১, কলকাতা
১০। নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট (Neuroscience and Hospital )
ঠিকানা : ১৮৫, আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোড, পশ্চিমবঙ্গ ৭০০০১৭, কলকাতা।
কলকাতার অভিজ্ঞ কিডনি চিকিৎসকদের তালিকা
- ডাঃ অরূপ রতন দত্ত
- ডাঃ ভি ভি লক্ষ্মণরয়ায়ন
- ডাঃ দিলীপ কুমার পাহাড়ি
- ডাঃ নিখিলেস রায়চৌধুরী
- ডাঃ প্রণব কুমার নন্দী
- ডাঃ সন্দীপ কুমার ভট্টাচার্য
- ডাঃ রাজীব সিনহা
- ডাঃ উপ সেনগুপ্ত
- ডাঃ বিজন কুমার ভট্টাচার্য
চেন্নাই কিডনি হাসপাতালের তালিকা
কলকাতা ছাড়াও ভারতের চেন্নাই শহরে বেশ কিছু ভালো কিডনি হাসপাতাল রয়েছে। এ সকল হাসপাতালেও আপনি অত্যাধুনিক কিডনি সমস্যার চিকিৎসা নিতে পারেন। আপনি যদি কিডনি চিকিৎসার জন্যে চেন্নাইকে বেছে থাকেন তবে নিচের তালিকাটি আপনার অনেক উপকার করবে বলে আশা করা যায়।
চেন্নাই এর কোথায় কোন কিডনি হাসপাতাল রয়েছে তা ছাড়াও চেন্নাই শহরে কিডনি জনিত চিকিৎসার জন্যে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের তালিকা গুলো নিচে দেয়া হলো –
MGM Healthcare
ঠিকানা: নতুন নম্বর- ৭২, পুরানো নম্বর- ৫৪ নেলসন মানিকাম রোড, আমিনজিকারাই, চেন্নাই – ৬০০০২৯
MIOT International
ঠিকানা: ৪/১১২, মাউন্ট পুনামাল্লি রোড, সত্য নগর, মানাপাক্কাম, চেন্নাই, তামিলনাড়ু ৬০০০৮৯
Dr. Kamakshi Memorial Hospital
ঠিকানা: ১,২০০ ফুট রেডিয়াল রোড, দণ্ডেশ্বর নগর, রোজ অ্যাভিনিউ, পল্লিকারনাই, চেন্নাই, তামিলনাড়ু ৬০০১০০
Fortis Hospital Malar
ঠিকানা: ১ম মেইন রোড নং ৫২, গান্ধী নগর, আদিয়ার, চেন্নাই ৬০০০২০
Noble Hospital
ঠিকানা: অদিপ্পা রাস্তা নং – ৪, আলগাপ্পা রোড, পুরাসাইওয়াক্কাম, চেন্নাই ৬০০০৮৪
চেন্নাই এর অভিজ্ঞ কিডনি চিকিৎসকদের তালিকা-
- ডাঃ এম এস আমরেসান
- ডাঃ সামপাথ কুমার পার্থসারথি
- ডাঃ প্রকাশ কে সি
- ডাঃ সতীশ এম রাও
- ডাঃ সৌন্দারারাজন পেরীয়াসামী
- ডাঃ আর ভেনকাতারামান
- ডাঃ এ কানাকারাজ
- ডাঃ রাভীকুমার এন আর
- ডাঃ বি সুবা রাও
- ডাঃ চীরানজেভী সহ আরও অনেকে।
ভারতের অন্যান্য কিডনি হাসপাতালের তালিকা
চেন্নাই এবং কলকাতার কিডনি হাসপাতালগুলো ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু জনপ্রিয় কিডনি হাসপাতাল রয়েছে। আসুন জেনে নেই, ভারতের অন্যান্য স্থানে শীর্ষস্থানীয় কিডনি হাসপাতাল ও কিডনি বিশেষজ্ঞদের তথ্য সম্পর্কে।
ভারতের অন্যান্য কিডনি হাসপাতালে তালিকা গুলো হল-
১। ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতাল
এটি নয়া দিল্লিতে অবস্থিত।
ঠিকানা : দিল্লি মথুরা রোড, সরিতা বিহার, দিল্লি ১১০০৭৬
২। মণিপাল হাসপাতাল
এটি ব্যাঙ্গালোরে অবস্থিত।
ঠিকানা : এইচএএল এয়ারপোর্ট রোড, ব্যাঙ্গালোর ৫৬০০১৭
৩। কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতাল
এটি মুম্বাইয়ে অবস্থিত।
ঠিকানা : রাও সাহেব, অচুত্রো পটওয়ার্দন মার্গ, অন্ধেরি পশ্চিম মুম্বাই ৪০০০৫৩।
৪। আর্টেমিস হাসপাতাল
এটি গুরুগ্রামে অবস্থিত।
ঠিকানা : সেক্টর ৫১, গুরুগ্রাম, হারিয়ানা ১২২০০১।
৫। অ্যাপোলো হাসপাতাল
এটি হায়দ্রাবাদে অবস্থিত।
ঠিকানা : রোড নং ৭২, জুবিলি হিলস, হায়দ্রাবাদ ৫০০০৩৩।
৬। নিউ এজ ওয়াকহার্ট হাসপাতাল
এটি মুম্বাইয়ে অবস্থিত।
ঠিকানা : ১৮৭৭, ডাক্তার আনন্দদ্র নাইর মার্গ, পূর্ব মুম্বাই ৪০০০১১।
ভারতের অন্যান্য প্রধান কিছু শহর যেমন দিল্লি, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর সহ আরও নানা স্থানের শীর্ষস্থানীয় কিছু চিকিৎসক রয়েছে। অনেকেই চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভালো বিশেষজ্ঞদের খুঁজে থাকেন। কিন্তু এ সম্পর্কিত সঠিক কোন তথ্য না পাওয়ায় তারা বিশেষজ্ঞদের সেবা থেকে বঞ্চিত হন।
নিচে আপনাদের সুবিধার্থে এমন কিছু অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের নামের তালিকা তুলে ধরা হলো –
মুম্বাইতে শীর্ষ কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তালিকা
- ডাঃ আরুন হালাংকর
- ডাঃ শারৎ শেঠ
- ডাঃ এনাল এলমেইদা
- ডাঃ এম আর মার্সেন্ট
- ডাঃ রামেশ বিএন রাংগারামু
- ডাঃ এল সুরাতকাল
- ডাঃ জ্যোৎসনা জপ
- ডাঃ ভারাত ভি শাহ
- ডাঃ এম এম বাহাদুর
- ডাঃ বি আর রামেশ রাও সহ আরও অনেকে।
দিল্লীতে শীর্ষ কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তালিকা:
- ডাঃ আশোক শারীন
- ডাঃ রাজেন্দ্র মঠুর
- ডাঃ খানদুজা
- ডাঃ ভিভেকানান্দ ঝা
- ডাঃ রামেশ হটচান্দিনী
- ডাঃ বিজয় খের
- ডাঃ সন্জীব গুলাতী
- ডাঃ উমেশ নাওতীয়াল
- ডাঃ সতীশ চন্দ্র ছাবড়া সহ আরও অনেকে।
ব্যাঙ্গালোরতে শীর্ষ কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তালিকা
- ডাঃ এইচ সুদর্শন বেললাল
- ডাঃ সুন্দর সংকরণ
- ডাঃ দিলীপ রাঙ্গারাজন
- ডাঃ এস পাদমানাভান
- ডাঃ রবি শংকর
- ডাঃ ইস্তিয়াক আহমেদ
- ডাঃ রামা কৃষ্ণান এস
- ডাঃ শকুন্তলা বিমদী
- ডাঃ রাজানন স্নিধা
- ডাঃ ভাষান্ত কুমার আর এস সহ আরও অনেকে।
হায়দ্রাবাদ এর শীর্ষ কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তালিকা
- ডাঃ গিরিশ নারায়ন
- ডাঃ কে সত্যনারায়ণ
- ডাঃ প্রদীপ দেশপান্ডে
- ডাঃ কে এস নায়েক
- ডাঃ সায়েদা সাইষ্টা এম হুসাইনি
- ডাঃ তরুণ সাহা
- ডাঃ দক্ষিণা মূর্তি
- ডাঃ রতন ঝা সহ আরও অনেকে।
কিডনি চিকিৎসার জন্য কিভাবে ভারতে যাবেন?
আপনি যদি ভারতে অর্থাৎ দেশের বাইরে কিডনি চিকিৎসার কথা ভেবে থাকেন সে ক্ষেত্রে ভারতে যাওয়ার জন্যে প্রথম কাজ হল পাসপোর্ট তৈরি করা। পাসপোর্ট তৈরির করার আবেদন নিজে গিয়ে করতে পারেন। আবার বর্তমান অনলাইন সুবিধার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসেই আবেদনটি করতে পারেন।
পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমেও আপনি ভারতে গিয়ে ডাক্তার দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অপারেশন বা সার্জারী করাতে পারবেন না। তাই এ ভিসার মাধ্যমে আপনি চেক আপ বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জেনে আসতে পারবেন।
আর আপনি যদি কিডনি প্রতিস্থাপন বা কিডনি পাথর অপসারন সহ আরও নানা ধরনের অপারেশন ভারতে গিয়ে করাতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে মেডিকেল ভিসা করতে হবে।
- আরো জানুনঃ কিডনি ভালো রাখার উপায়
তাই, ভারতে কিডনি চিকিৎসার ক্ষেত্রে আপনাকে মেডিকেল ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। মেডিকেল ভিসা সংগ্রহের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট নিয়মানুসারে ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদনকারী কে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে অনুমোদন পাওয়ার জন্যে। আপনার ভিসা যদি অনুমোদিত হয় তবেই আপনি ভ্রমণ তারিখ নির্ধারণ করতে পারবেন।
রোগীর জন্য যেমন মেডিকেল ভিসা প্রয়োজন তেমনি রোগীকে সেবার করার জন্য একজন অভিভাবকের মেডিকেল পরিচালক ভিসার দরকার হয়ে থাকে। অবশ্যই অভিভাবককে রোগীর রক্তের সম্পর্কিত হতে হবে। এজন্য অভিভাবককে মেডিকেল পরিচালক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের নিয়মাবলী একই ধরনের যেমনটা মেডিকেল ভিসার জন্যে করা হয়। কোন ডাক্তার যদি রোগীর সাথে যেতে চান তবে তাকেও মেডিক্যাল অ্যাডভেন্টেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
ভারতের মেডিকেল ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে?
মেডিকেল ভিসার ক্ষেত্রে যেসব ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হবে তা হচ্ছে –
- অন্তত ছয় মাসের মেয়াদ যুক্ত পাসপোর্ট,
- ভোটার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন যার তথ্যের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে
- তার ফটোকপি,
- ২×২ পাসপোর্ট সাইজের ছবি,
- বাংলাদেশ থেকে যে ডাক্তারকে দেখিয়েছেন তার সকল প্রেসক্রিপশন, টেস্ট রিপোর্ট ও ডক্টরের পরামর্শ,
- ভারতের যে হাসপাতালে আপনি চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন তার সকল ডকুমেন্ট
- বাধ্যতামূলক চেক-আপ রিপোর্ট
- মেডিকেল ভিসা অনুমোদন পত্র
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- সরকার কতৃক অনুমোদিত ছুটির কাগজ
- বিদ্যুৎ বিল এর ফটোকপি ইত্যাদি
এছাড়াও সময় এবং প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে আরো বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টের প্রয়োজন হতে পারে।
ভারতে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার আগে কোন কোন টিকা নেয়া দরকার?
ভারতে চিকিৎসার নেয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিম্ন লিখিত ভেকসিন নেয়া নিশ্চিত করতে হবে। এর কারন হচ্ছে ভারত সরকার চায় না যে তারা অন্য দেশের মানুষকে সেবা প্রদান করতে গিয়ে নিজের দেশের মানুষদের বিপদের মুখে ফেলতে।
যেসকল সংক্রমণ জাতীয় রোগ গুলো ভেকসিনেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব সে সব ভেকসিন নেয়া হয়েছে এমন নিশ্চিত ডকুমেন্ট আপনাকে দেখাতে হবে। এই ভেকসিনেসেশনে ডকুমেন্ট অবশ্যই রোগী (শারিরীক সুস্থতার উপর ভিত্তি করে যদি সম্ভব হয়) ও তার অভিভাবক (অবশ্যই) এর জন্য প্রযোজ্য হবে।
কোন কোন ভেকসিন আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে চলুন তা জেনে আসা যাক –
- Covid -19 (করোনা ভেকসিন)
- ডিপথেরিয়া পেটুসিস
টিটেনাস (ডিপিটি)
- হাম, মাম্পস, এবং রুবেল (এমএমআর)
- পোলিও ( ক্যাপশল বা ইনজেকশনযোগ্য পোলিও ভ্যাকসিন)
- হেপাটাইটিসের যে কোন একটি ভেকসিন (হেপাটাইটিস বি)
- টাইফয়েড (যদি হয়)
সময় ও প্রয়োজনীয়তার অনুসারে ভেকসিন ডোজ নেয়ার প্রক্রিয়াতে তারতম্য দেখা দিতে পারে। অপ্রকাশিত যেকোনো অবস্থার ভিত্তিতে আপনার ভ্যাকসিন ডোজের পরিমাণ বৃদ্ধি হতে পারে। যেমন: করোনার কথা চিন্তা করলে হঠাৎ এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রথমে ভ্যাকসিন ব্যবস্থা না থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে।
এজন্যই সংক্রমিত রোগের জন্য যেসব ভ্যাকসিন বর্তমানে এভেলেবেল আছে চেষ্টা করুন ভ্যাকসিন ডোজ গুলো নিয়ে রাখার।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসার নিতে যাওয়ার আগে যে কাজ গুলো করবেন?
আপনি যদি কিডনি জনিত রোগের জন্যে স্বল্প খরচে ও অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা পেতে ভারতে যেতে চান, অবশ্যই যাওয়ার জন্যে কি কি করনীয় তা জেনে নিবেন। এমনই কিছু তথ্য সম্পর্কে চলুন জেনে আসি যা আপনার এ ব্যপারে অনেকাংশে সাহায্য করবে বলে মনে করছি।
কাজ গুলো হল-
- আপনি ভারতে যে হসপিটালে বা যে ডাক্তারের কাছে দেখাতে চান অবশ্যই যাওয়ার পূর্বে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখবেন। এতে করে ভারতে গিয়ে আপনার আর সময় নষ্ট করতে হবে না আপনি সরাসরি চিকিৎসা করাতে পারবেন।
- অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া হয়ে গেলে ট্রেন বা বিমানের টিকিট আগে থেকেই কেটে রাখবেন। তা না হলে আপনাকে পরবর্তীতে ট্রেন বা বিমানের টিকেট কাটা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। সঠিক সময়ে টিকিট না পেলে আপনার চিকিৎসায় আরও ব্যঘাত ঘটতে পারে।
- এছাড়াও টিকিট কাটার সময়ে অবশ্যই ভালো ভাবে তারিখ দেখে নিবেন। কারন একবার যদি টিকিট কাটা হয়ে যায় তবে তা আবার পরিবর্তন করা অনেক ঝামেলার। তাই ভালো ভাবে তারিখ দেখে নিবেন টিকিট কাটার ক্ষেত্রে।
- টাকা নেয়ার ক্ষেত্রে আপনি ক্যাশ অথবা ক্রেডিট কার্ড নিতে পারেন। আপনি যে সময় চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন তখন ডলার রেট কেমন তা সম্পর্কে অবশ্যই জেনে যাবেন। ক্যাশ নেয়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দিবেন কারন কিছুটা টাকা বেশি নিলে সমস্যা হবে না কিন্তু কম হলে আপনার বিপদে পরার সম্ভাবনা থাকতে পারে। ডলার ভাঙানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
- মেডিকেল ভিসায় ভারতে চিকিৎসার জন্য গেলে ওখানকার স্থানীয় থানায় এটি ইনফরম করতে হয়। অবশ্যই মনে করে কাজটি করবেন। এতে করে দেখা যায় আপনি কোন বিপদে পড়লে এটি অনেক সময় সাহায্য করে। এছাড়াও যেকোনো ধরনের জটিলতায় অবশ্যই হাইকমিশনের সাহায্য নিবেন।
- আপনি অনলাইনের মাধ্যমে আপনার হাসপাতালের কাছাকাছি কোনো হোটেল বা লজ আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে আপনাকে ভারতে যাওয়ার পরে হোটেল খুঁজতে ঝামেলা হবে না।
- ভারতে গিয়ে করোনা টেস্ট করাতে হবে কিনা তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নিবেন। যদি টেস্ট করাতে হয় তবে তা কতদিনের মধ্যে করতে হবে তা জেনে দ্রুত টেস্ট করে ফেলবেন।
- ভারতে চিকিৎসার জন্যে গেলে অবশ্যই সময় সম্পর্কে সচেতন থাকবেন আর সব সময় সিরিয়াল মেইনটেইন করার চেষ্টা করবেন।
ভারতে কিডনি রোগের চিকিৎসার খরচ কেমন?
মানসম্মত প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ভারতে এখন কিডনি জনিত রোগের চিকিৎসা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও স্বল্প খরচের মধ্যে উন্নত মানের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য মানুষ ভারতের বিভিন্ন কিডনি হাসপাতালের শরণাপন্ন হচ্ছে।
চিকিৎসার মান, ধরন ও অবস্থার উপর ভিত্তি করে কিডনিজনিত রোগের খরচের তারতম্য রয়েছে। আপনি যদি কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা ভেবে থাকেন সেক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা ব্যয় হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন কারনের উপর ভিত্তি করে খরচের পরিমাণ কম বেশি হতে পারে। থাকা- খাওয়ার খরচ, কিডনি জটিলতা, অন্য কোনও মেডিকেল অসুস্থতা, ডায়াবেটিস, হাসপাতালে কোন ডাক্তার দেখাচ্ছেন, এবং চিকিৎসার শহর সহ হসপিটালের উপর ভিত্তি করে ব্যয়ের পরিমাণ কম বেশি হয়।
আপনি একটি সঠিক ব্যয় সম্পর্কে জানতে পারবেন যদি আপনি এ সকল বিষয়ের খরচের পরিমাণ জানতে পারেন। এ কারণে সম্ভবত আপনার ব্যয়ের পরিমাণ হতে পারে ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে আনুমানিক একটি খরচের পরিমাণ দেয়া হয়েছে। তবে আপনার কিডনি চিকিৎসার মান বা ধরনের ভিত্তিতে এই পরিমাণের কিছুটা তারতম্য হতে পারে।
এছাড়াও আরো কিছু চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ খরচ হয় তা হল-
- হেমোডায়ালাইসিস – প্রতি সেশনে ৩০০০- ১২০০০ রুপি যা বাংলাদেশী টাকায় ৪০০০ থেকে ১৬০০০ টাকার মতো
- স্টেম সেল থেরাপি – ১৪৯০০০ – ৩০০০০ রুপি প্রতি সেশনে (বা ২০০০০০ থেকে ৪০০০০০ টাকা)
- রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট – একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৪৭৫০০০ – ৭৩০০০০ রুপি (বা ৬৩০০০০ থেকে ৭০০০০০ টাকা)।
- পোস্ট-ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি ওষুধ – প্রতি মাসে ১০০০০ রুপি (বা ১৩০০০ টাকা)।
- কিডনি ক্যান্সারে আনুমানিক খরচ ২০০০০০ থেকে ৪০০০০০ রুপি (২৬০০০০ থেকে ৫৩০০০০ টাকা).