সৌন্দর্যের রাণী বান্দরবান জেলার অসাধারণ সব পাহাড় আর ঝর্ণার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি প্রকৃতিক বণ্য ঝর্ণা হলো ফাইপি ঝর্ণা। লোকালয় থেকে একদমই বিচ্ছিন্ন বলে এই ঝর্ণার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন কয়েক গুন বেশি। সুউচ্চ পাহাড়ি খাদ থেকে নেমে এসে প্রবল গতিতে ঝর্ণার পানি আছড়ে পড়ে শ্যাওলা জমা পাথরের গায়ে। সেই শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে চারদিকের পাহাড়।
এমনই এক মায়ায় ঘেরা পরিবেশে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে চাইলে অবশ্যই ঘুরে আসতে হবে বান্দরবানের ফাইপি ঝর্ণা থেকে। তবে এই ঝর্ণার সৌন্দর্য যেমন অসাধারণ পথও কিন্তু তেমনই দুর্গম। তাই আপনি যদি দুর্গম পথে ট্রেকিং করার জন্য শারিরীক ভাবে সক্ষম হয়ে থাকেন, তবেই ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন। তবে ট্রেকিংয়ের পুরোটা পথই পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
আর ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমণ করতে চাইলে অবশ্যই হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকতে হবে। তবে একবার ফাইপি ঝর্ণার দর্শন পেলে ট্রেকিং এর পুরো পথের ক্লান্তি নিমিষেই হারিয়ে যাবে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের যাবতীয় তথ্য ও দিকনির্দেশনা পাবেন। তাই দেরি না করে চলুন কল্পনাতে একবার বান্দরবানের ফাইপি ঝর্ণা থেকে ঘুরে আসা যাক।
ফাইপি ঝর্ণার অবস্থান
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার একটি পাহাড়ি এলাকা হলো থাইকং পাড়া। থাইকং পাড়ার লোকালয় থেকে কিছুটা দূরে ফাইপি ঝর্ণা অবস্থিত। এই অঞ্চলকে চারদিক থেকেই পাহাড়ের রাজ্য ঘিরে রেখেছে। বাংলাদেশের সবথেকে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ ‘তাজিংডং’ থাইকং পাড়ার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত।
অন্যদিকে কেওক্রাডং এর অবস্থান থাইকং পাড়া থেকে উত্তর দিকে। এর পূর্বে রয়েছে মদক রেঞ্জ আর পশ্চিমে কপিতাল পাহাড়। সব মিলিয়ে পাহাড়ে ঘেরা এক মায়াবী রাজ্যের ছায়াতলে ফাইপি ঝর্ণার অবস্থান। তবে ফাইপি ঝর্ণার উদ্যেশ্যে ট্রেকিং করার সময় কপিতাল পাহাড়ের ভিউ সবথেকে ভালোভাবে উপভোগ করা যায়।
ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
সাধারণত ভরা বর্ষার মৌসুমে বাংলাদেশের প্রায় সব ঝর্ণা নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরে। কিন্তু ফাইপি ঝর্ণার ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু ব্যতিক্রম। বর্ষার শেষের দিকে যখন শরতের ঝলমলে আকাশের সন্ধান মেলে তখন ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের উপযুক্ত সময়। কেননা ভরা বর্ষার সময় এই ঝর্ণার পানি কিছুটা কর্দমাক্ত ও ঘোলাটে বর্ণ ধারণ করে। কিন্তু বর্ষার শেষের দিকে ফাইপি ঝর্ণার পানি হয়ে ওঠে টলটলে এবং স্বচ্ছ।
তাছাড়া পুরো বর্ষা জুড়ে পাহাড়ের রাস্তা খুবই পিচ্ছিল থাকে। এ-সময় দুর্গম পাহাড়ের রাস্তায় ট্রেকিং করাটাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের উদ্যেশ্য ট্যুর প্লান করলে বর্ষার শেষ এবং শরতের শুরু এমন সময়কে প্রাধান্য দেয়া উচিত। অর্থাৎ জুলাই থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে ট্যুর প্লান করা উচিত। তবে বর্ষা কিংবা শীতের মৌসুমেও অনেক পর্যটক এই স্পটে ভ্রমণে আসে।
ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমণের সময় যা যা উপভোগ করবেন
শুধু ঝর্ণার সৌন্দর্যই নয়, বরং আরও বিভিন্ন উপভোগ্য বিষয়বস্তু থাকতে পারে আপনার ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের তালিকায়। সব মিলিয়ে যে সকল বিষয়গুলো আপনার একদমই মিস করা উচিত নয় তার কিছু উদাহরণ দেয়া হলো-
১. ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করা
যেহেতু ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের উদ্যেশ্যেই যাচ্ছেন তাই এর সৌন্দর্য উপভোগ করার বিষয়টি আলাদা করে না বললেও চলে। তবে ফাইপি ঝর্ণার মোহনীয় সৌন্দর্য সম্পর্কে কিছু না বললেও হয় কী করে। ট্রেকিং করতে করতে ঝর্ণার কাছাকাছি চলে আসলেই শুনতে পাবেন বুনো ঝর্ণার মনোমুগ্ধকর গর্জন।
ঝর্ণায় পৌঁছানোর আধ ঘন্টা আগ থেকেই এই গর্জন শোনা যায়। ঝর্ণার মুখোমুখি হওয়ার সাথে সাথে আপনি অবাক না হয়ে পারবেন না। পাহাড়ের উঁচু পাথরের ওপর থেকে সজোরে নেমে আসা পানির প্রবাহ ছুটে চলেছে ঝর্ণার চারপাশে বিছিয়ে থাকা পাথরের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে।
বড় বড় পাথরের ওপর প্রবাহিত পানিতে পা ভিজিয়ে ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করার সৌভাগ্য খুব কম মানুষেরই হয়। লোকালয় থেকে একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের মাধ্যমে।
২. ঝর্ণার পানিতে গোসল
পুরোটা পথ ট্রেকিং করার ফলে সবার অবস্থাই মোটামুটি বেহাল হয়ে যাবে। পুরোটা পথের ক্লান্তি এক নিমিষেই ধুয়ে ফেলতে পারবেন ঝর্ণার স্বচ্ছ পানিতে। পাথরের গা বেয়ে প্রবাহিত জলের ধারায় শরীর ভিজিয়ে এক প্রশান্তির নিশ্বাস নিতে পারবেন চাইলেই। তাই ট্রেকিং এর আগেই প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় একটি প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে ব্যাকপ্যাকে নিয়ে নিন।
৩. জুম রাস্তা ধরে পাহাড় ট্রেকিং
থাইকং পাড়া থেকে শুরু করে ফাইপি ঝর্ণা পর্যন্ত বেশিরভাগ পথই জুম রাস্তা ধরে এগিয়ে গেছে। রাস্তার দুই পাশে দেখতে পাবেন পাহাড়িদের জুম চাষের ক্ষেত। গম, ভুট্টা, সবজি সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত চোখে পড়বে ট্রেকিং করতে করতে। চাইলে জমির মালিকের অনুমতি নিয়ে কাঁচা খাওয়ার উপযোগী সবজি ক্ষেত থেকে তুলে খেতে পারবেন। থাইকং পাড়া থেকে ফাইপি ঝর্ণা পর্যন্ত পুরোটা রাস্তাই পাহাড়ি জীবনযাত্রার সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে যেতে পারবেন।
৪. কপিতাল পাহাড়ের ভিউ উপভোগ
ফাইপি ঝর্ণায় যাওয়ার পথ যে পাহাড়ের উপরে তার ঠিক পাশের পাহাড়টি হলো বিখ্যাত কপিতল পাহাড়। ট্রেকিং এর পুরোটা পথেই কপিতল পাহাড়ের ভিউ উপভোগ করতে পারবেন৷ দুটি পাহাড়ের মাঝখানে একটি ভ্যালির সৃষ্টি হয়েছে। সেখান থেকে শরতের আকাশে পেজা তুলোর মতো সাদা মেঘের আনাগোনা দেখতে পারবেন।
৫. জুম ঘরে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা
ট্রেকিং করে ফেরার পথে যদি রাত হয়ে যায় তবে জুম ঘরে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। জুম রাস্তার দুই দিকে কিছুক্ষণ পর পরই জুম ঘরের দেখা মিলবে। গাইডের সাহায্য নিয়ে জুম ঘরের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে জুম ঘরে রাত কাটাতে পারবেন। পাহাড়ি অঞ্চলে কোনো রকম একটি নড়বড়ে ঘরে পুরো একটি রাত ট্যুর টিমের সাথে কাটানোর অভিজ্ঞতা কিন্তু দারুণ।
৬. ঝর্ণার পাশে রান্না করে কলাপাতায় খাওয়া
ট্রেকিং করে ঝর্ণা পর্যন্ত আসতে আসতে দলের সবাই বেশ ক্লান্ত হয়ে যাবে। সাথে প্রয়োজনীয় রসদ ও পাত্র নিয়ে আসলে ঝর্ণার পাশেই রান্নার কাজ সেরে ফেলতে পারবেন। এক্ষেত্রে লোকাল গাইড সার্বিক সহযোগিতা করবে। ইটের চুলায় রান্না করে গরম ধোঁয়া ওঠা খাবার কলাপাতায় পরিবেশন করে খাওয়ার অভিজ্ঞতা মিস করা একদমই উচিত হবে না।
তাছাড়া রাতে জুম ঘরে বসেও ছোটখাটো একটা চড়ুইভাতির আয়োজন করা যেতে পারে। বুঝতেই পারছেন কতোটা এডভেঞ্চার ও রোমাঞ্চকর অনুভূতি লুকিয়ে আছে ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের মধ্যে। তাই আপনার পরবর্তী ট্যুর প্লান অবশ্যই বান্দরবানের ফাইপি ঝর্ণা হওয়া উচিত।
ফাইপি ঝর্ণায় যাওয়ার উপায়:
বান্দরবান থেকে দুইটি উপায়ে ফাইপি ঝর্ণায় পৌঁছাতে পারবেন। একটি হলো বান্দরবান থেকে থানচি হয়ে থাইকং পাড়া। আরেকটি উপায় হলো বান্দরবান থেকে রুমা উপজেলা হয়ে থাইকং পাড়া। দুটি পদ্ধতিতেই প্রায় সমান দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে এবং সময়ও মোটামুটি একই রকম লাগবে। তবে প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে বান্দরবান উপস্থিত হতে হবে।
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকে বান্দরবান অথবা চট্টগ্রামের বাস পাওয়া যায়। সরাসরি বান্দরবান যাওয়ার বাস না পেলে চট্টগ্রামের বাস ধরে কিংবা ট্রেনে চেপে প্রথমে চট্টগ্রাম পৌঁছে সেখান থেকে বাস যোগে বান্দরবান যেতে পারবেন। ঢাকার সায়দাবাদ থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, ইউনিক পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস সহ বেশ কয়েকটি বাস সরাসরি বান্দরবান এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে আলাদা আলাদা টাইম শিডিউলে প্রতিটি বাস প্রতিদিন চলাচল করে। জনপ্রতি বাস ভাড়া পড়বে ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা। বাস যোগে ঢাকা থেকে বান্দরবান যেতে সময় লাগবে সাত থেকে সাড়ে সাত ঘন্টা।
থানচি হয়ে থাইকং পাড়া-
বান্দরবান থেকে থানচি হয়ে থাইকং পাড়া যেতে চাইলে প্রথমে আপনাকে থানচি যাওয়ার গাড়ি ধরতে হবে। বান্দরবান জেলা সদর থেকে থানচি যাওয়ার লোকাল বাস ও চাঁদের গাড়ি পাওয়া যায়। বান্দরবান থেকে থানচির মধ্যবর্তী দূরত্ব ৭৯ কিলোমিটার। বান্দরবান থেকে থানচি যেতে সময় লাগবে চার থেকে সাড়ে চার ঘন্টা।
লোকাল বাসে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। চাঁদের গাড়ি বা লোকাল জীপ রিজার্ভ করে যেতে চাইলে ভাড়া পড়বে ৪০০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকা। থানচি থেকে পুরোটা পথ ট্রেকিং করে থাইকং পাড়া পৌঁছাতে হবে। থানচি থেকে থাইকং পড়া যাওয়ার পথে বোর্ডিং পাড়া, সেরকর পাড়া ও বাকলাই পাড়া অতিক্রম করতে হবে। চাইলে এসব গ্রামে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে আবার ট্রেকিং করতে পারবেন।
ঐ দিনই ফাইপি ঝর্ণার উদ্যেশ্যে যাত্রা না করে রাতটা থাইকং পাড়াতে কাটিয়ে দিতে পারেন। কেননা থাইকং পাড়া থেকে ট্রেকিং করে ফাইপি ঝর্ণা দেখার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন না। হাতে বেশি সময় থাকলে পরেরদিন সকালে ফাইপি ঝর্ণার উদ্যেশ্যে ট্রেকিং শুরু করতে পারেন।
রুমা হয়ে থাইকং পাড়া:
এক্ষেত্রে বান্দরবান থেকে প্রথমে রুমা উপজেলায় চলে যেতে হবে। বান্দরবান থেকে সরাসরি রুমা যাওয়ার বাস ও চাঁদের গাড়ি পেয়ে যাবেন। বান্দরবান থেকে রুমা পৌঁছাতে সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘন্টা থেকে চার ঘন্টার মতো। লোকাল বাস বা জীপে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা।
আর চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ করে গেলে ভাড়া পড়বে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকা। রুমা থেকে বাকিটা পথ ট্রেকিং করে থাইকং পাড়া পৌঁছাতে হবে৷ যাত্রা পথে বগা লেক ও কেওক্রাডং ভ্রমণ করতে পারবেন। তাই যাদের এখনও বগা লেক ও কেওক্রাডং ভ্রমণের সৌভাগ্য হয়নি তারা রুমা হয়ে থাইকং পাড়া যেতে পারেন। এক্ষেত্রে একই সময় ও একই খরচে তিনটি স্পট ঘুরে দেখার সুযোগ হবে।
থাইকং পাড়া থেকে ফাইপি ঝর্ণা-
থাইকং পাড়া থেকে ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমনের জন্য লোকাল গাইড সাথে নেয়া বাধ্যতামূলক ছিল না৷ কিন্তু বর্তমানে গাইড সাথে নেয়া আবশ্যক করা হয়েছে। থাইকং পাড়ায় এক রাত কাটিয়ে পরেরদিন খুব ভোরে ফাইপি ঝর্ণার উদ্যেশ্যে ট্রেকিং শুরু করতে হবে। সাথে থাকবে একজন লোকাল গাইড।
পুরো যাত্রার আপ ডাউন খরচ বাবদ একজন গাইডকে ১৫০০ টাকা চার্জ প্রদান করতে হবে। এই পথে ট্রেকিংয়ের ক্ষেত্রে বেশিরভাগই জুম পথ পাবেন। আগে পুরোটা রাস্তাই দুর্গম পাহাড়ি উঁচু নিচু খাদে ভরপুর ছিল। এই অঞ্চলে জুম চাষ শুরু হওয়ার পর থেকে পাহাড় কেটে মাটির জুম পথ তৈরি করা হয়েছে।
তাই পথ চলা মোটামুটি সুবিধাজনক। তবে ঝর্ণায় পৌঁছানোর আধাঘন্টা আগ থেকে পুরোটা পথ একেবারে খাঁড়া। তাই এই পথ টুকু খুবই সাবধানে পাড় হতে হবে। পায়ে হেঁটে পুরোটা পথ ট্রেকিং করে ফাইপি ঝর্ণায় পৌঁছাতে সময় লাগবে ৩ ঘন্টার মতো।
থাকা ও খাওয়া:
দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় থাকার জন্য কোনো আবাসিক হোটেল বা বোর্ডিং পাবেন না। যাত্রা পথে রাতটুকু কাটাতে হবে কোনো এক জুম ঘরে। তাছাড়া দিনে দিনে পৌঁছাতে পারলে থাইকং পাড়ায় গিয়েও আশ্রয় নিতে পারবেন। খাওয়ার জন্য নিজেরা বাজার করে নিজেদেরই রান্না করে খেতে হবে। এক্ষেত্রে থানচি বা রুমা বাজার থেকে আসার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিয়ে আসা ভালো।
রান্নায় বৈচিত্র্য আনতে জুমের সবজি সংগ্রহ করেও খেতে পারবেন। তবে থাকা খাওয়ার বিষয়ে যে কোনো সমস্যা সমাধানে আপনার সাথে থাকা গাইড সব ধরনের সহায়তা করবে।
সতর্কতা:
১. পাহাড়ি রাস্তা বৃষ্টির পরের সময়েও বেশ পিচ্ছিল থাকে। তাই চলাচলের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে৷
২. থাইকং পাড়া থেকে ফাইপি ঝর্ণা পর্যন্ত পুরোটা পথে কম বেশি জোকের আক্রমণ রয়েছে। জোকের হাত থেকে বাঁচার জন্য উঁচু এবং পুরো পা আবৃত থাকে এমন জুতা পরিধান করুন এবং গাইডের সাহায্য নিন।
৩. পথিমধ্যে সাপের সম্মুখীন হলে পাশ কাটিয়ে চলে আসুন। মনে রাখবেন সাপকে বিরক্ত না করলে সাপ কারো ক্ষতি করবে না।
৪. দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় গাইড আপনার একমাত্র ভরসা। তাই গাইডের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন।
এই ছিলো ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আশাকরি বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ট্যুর প্লান করার জন্য এই আর্টিকেলটি আপনার সহায়ক হবে। আপনার ফাইপি ঝর্ণা ভ্রমণ যাতে সুন্দর ও নিরাপদ হোক। ধন্যবাদ।