বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা নগরীতে গড়ে উঠেছে দেশ খ্যাত সব মার্কেট তথা শপিংমল। এদেশের উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় সবগুলো শপিং মলই ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত। পাইকারি ও খুচরা অসংখ্য ছোট বড় মার্কেট রয়েছে রাজধানীতে। এসব মার্কেট গুলোতে শুধুমাত্র ঢাকার বাসিন্দারাই নয় বরং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসে একটু সাচ্ছন্দ্যে ভালো মানের পণ্য তুলনামূলক কম দামে কেনার জন্য।
কিন্তু বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আগত ক্রেতাদের অনেকেই এসব শপিং মল সম্পর্কে তথ্যহীনতায় ভুগে থাকেন, ফলে তাদের কেনাটাকা করতে এসে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ঢাকার পরিচিত ১০টি মার্কেটের তালিকা, বন্ধের দিন এবং অন্যান্য তথ্য
ঢাকা নগরীর এক প্রান্তের মানুষের অন্য প্রান্তের শপিংমল গুলো সম্পর্কে পুরোপুরি ধারনা থাকে না বিধায় কেনাকাটস করতে এসে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন।
তাই আপনাদের সমস্যার বিষয়টি মাথায় রেখে আজকের এই আয়োজনে ঢাকার স্বনামধন্য বেশ কয়েকটি শপিংমল তথা মার্কেট সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
১. গাউছিয়া মার্কেট
ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের মানুষের কেনাকাটার খুবই জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য মার্কেট হলো ঢাকার গাউছিয়া মার্কেট। এটি ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মার্কেটগুলোর একটি।
বিয়ের কেনা কাটা থেকে শুরু করে ঈদ,পূজা পার্বণ বা যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের কেনাকাটায় ক্রেতাদের পছন্দের ও নির্ভরতার জায়গা গাউছিয়া মার্কেট ।কোনো বিশেষ দিন বাদেও প্রায় প্রতিদিনই ক্রেতাদের উপচে পরা ভীড় দেখা যায় এই মার্কেটে।
ঢাকা সিটি কলেজের দক্ষিণ দিকে ও ঢাকা নিউমার্কেট এর ঠিক পাশেই গাউছিয়া মার্কেট অবস্থিত। নীলক্ষেত থেকে এই মার্কেটটির অবস্থান দক্ষিণে।মার্কেটের সামনেই প্রধান সড়ক।ঢাকার যে কোনো প্রান্ত থেকে এই রোড হয়ে এখানে আাসতে পারবেন।ঢাকার আশেপাশের যে কোনো এলাকা থেকে গুলিস্তান হয়ে আসতে পারবেন গাউছিয়া মার্কেটে।
ঢাকার গাউছিয়া মার্কেট বন্ধের দিন
মঙ্গলবার পুরো দিন এবং বুধবার অর্ধেক দিন এই মার্কেটের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে।বাকি সব দিনগুলোতে সকাল ৯ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত পুরোদমে কেনা কাটা চলে এই মার্কেটে।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে হাজার হাজার ক্রেতা সমাগম হওয়ার একমাত্র কারণ, এখানে সব ধরনের পণ্যের বিপুল সমাহার রয়েছে।বিশেষ করে মেয়েদের কেনাটার এ টু জেট সব ধরনের পণ্যই এই মার্কেটে পাইকারি ও খুচরাভাবে বিক্রি করা হয়।তাই এই মার্কেটে পুরুষের থেকে নারী ক্রেতার আনাগোনা বেশি হয়।
জামদানী থেকে শুরু করে, রেডিমেড পোষাক, থ্রি পিস,লুঙ্গি, টুপি, ওড়না,সুতি কাপড় ও অন্যান্য শাড়ির হরেক রকম পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন দোকানীরা।হাজার হাজার ডিজাইন ও রঙের মধ্য দিয়ে আপনি পছন্দ করে নিতে পারবেন আপনার রুচিসম্মত পণ্যটি।
২. নিউ মার্কেট,ঢাকা
ঢাকার সবথেকে ব্যাস্ততম মার্কেট হলো নিউ মার্কেট।কোনো উপলক্ষ ছাড়াই প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতার সমাগম থাকে এই মার্কেটে।সাধারণত তৈরি পোষাক তথা রেডিমেড গার্মেন্টস এর জন্য খুবই জনপ্রিয় এই মার্কেট।প্রতিদিন ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের অসংখ্য ক্রেতা তুলনামূলক একটু কম বাজেটে কেনাকাটা করার জন্য এখানে উপস্থিত হন।
ঢাকার আজিমপুরের উত্তরাংশে মিরপুর রোডে এই মার্কেটটির অবস্থান। নিউ মার্কেটের দক্ষিণে নীলক্ষেত বই মার্কেট ও পূর্ব দিকে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এলিফেন্ট রোড।
ঢাকার নিউ মার্কেট বন্ধের দিন কবে?
ঢাকা নিউ মার্কেটে মঙ্গলবার সারা দিন এবং বুধবার অর্ধদিবস সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে।বাকি দিনগুলোতে সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ক্রেতা সমাগমে মুখরিত থাকে মার্কেটটি।
ত্রিভুজ আকৃতির এই মার্কেটটিতে ৪৪০ টি দোকান রয়েছে,যেখানে তৈরি পোষাক, প্রসাধনী সামগ্রী থেকে শুরু করে ঘরের যাবতীয় সব ধরনের জিনিস পাওয়া যায়।
৩. মৌচাক মার্কেট
বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেট হলো মৌচাক মার্কেট।প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার ক্রেতার সমাগম হয় এই মার্কেটে।
মৌচাক মার্কেট ঢাকার মালিবাগে অবস্থিত। এই মার্কেটের দক্ষিণ দিকে বিজ্ঞান কলেজ ও মালিবাগ বাসস্ট্যান্ড,উত্তরে সিদ্ধেশ্বরী স্কুল এন্ড কলেজ ও পূর্বে মালিবাগ রেলগেট অবস্থিত।
সড়ক ও রেলপথ দু ভাবেই আসা যায় মৌচাক মার্কেটে।
মৌচাক মার্কেট কর্তৃপক্ষের মোবাইঃ ০১৭২৪-৪৪৪৪৪৫
ই-মেইলঃ [email protected]
মোচাক মার্কেট বন্ধের দিন
মোচাক মার্কেট সপ্তাহে একদিন ( বৃহস্পতিবার) বন্ধ থাকে।এছাড়া দুই ঈদে ৪ দিন করে ঈদের বন্ধ থাকে।বাকি দিনগুলোতে সব সময়ই ক্রেতা বিক্রেতার সমাগমে প্রাণচঞ্চল থাকে এই মার্কেটটি।
পাঁচতলা ভবন বিশিষ্ট এই মার্কেটে কাপড় কিনতে আসলে আপনাকে সরাসরি চলে যেতে হবে মার্কেটের ৪ র্থ তলায়। এখানে শাড়ি,থ্রি পিস,বাচ্চাদের পোষাক সহ যাবতীয় সব ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। সব ধরনের গহনার জন্য যেতে হবে ২য় তলায়।
৩য় তলায় পাবেন প্লাসিক ও ক্রোকারিজ আইটেম।ঘরের যাবতীয় কেনাকাটা সব এই ফ্লোর থেকেই করতে পারবেন। খাওয়া দাওয়ার জন্য ১ম তলায় আছে সব ধরনের ফাস্টফুডের দোকান ও ৫ম তলায় আছে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট।৫ম তলায় এই মার্কেটের মসজিদ অবস্থিত।
৫. চক বাজার পাইকারি মার্কেট – ঢাকার পাইকারি মার্কেট
বাংলাদেশের সবথেকে বড় ও পুরোনো পাইকারি মার্কেট হলো চকবাজার পাইকারি মার্কেট। প্রতিদিন হাজার হাজার ব্যবসায়ী বাংলাদেশের সব এলাকা থেকে চকবাজারে এসে ভিড় করেন।এখান থেকে সারা বাংলাদেশে পাইকারিভাবে পণ্য সরবরাহ করা হয়।চকবাজার থেকে পণ্য কিনে দুই থেকে তিনগুণ মুনাফা লাভ করতে পারে ব্যবসায়ীরা।তাইতো প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের কেনাকাটার ভিড়ে মুখরিত হয়ে থাকে এই মার্কেটেটি।
মুলত মনোহরি পণ্যের জন্য এই মার্কেট সবথেকে বেশি বিখ্যাত।তাই এই মার্কেটটি মনিহারী পণ্যের হোলসেল মার্কেট হিসেবেও বহুল পরিচিত।
বিখ্যাত ও ঐতিহ্যবাহী এই মার্কেটটি পুরান ঢাকার লালবাগে অবস্থিত।এর আসে পাশে কয়েয়কটি সুপরিচিত জায়গা হলোঃ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার,বেগম বাজার ও বড় কাঠারা।
বন্ধের দিন
রাজধানীর ব্যাস্তময় এই মার্কেটটি শুক্রবার পুরো দিন এবং শনিবার অর্ধেক বেলা বন্ধ থাকে।তবে শনিবার সকাল থেকেই আস্তে আস্তে দোকানপাট খুলতে শুরু করে।
বাকি দিনগুলোতে সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত সব দোকান পাট খোলা থাকে।
মনোহরি পণ্যের পাশাপাশি সব ধরনের পণ্যই পাইকারি কিনতে পাওয়া যায় এই মার্কেটে।কাপড়,প্রসাধনী, সিটি গোল্ড এর জুয়েলারি,খেলনা,জুতা,ব্যাগ থেকে শুরু সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাইকারি মূল্যে পাবেন চকবাজার পাইকারি মার্কেটে।এখানকার বেশ কিছু খাবার সারা বাংলাদেশের মধ্যে বিখ্যাত। এই মার্কেট থেকে পাইকারি পণ্য কিনে ব্যবসা করে নিজেদের জীবনের চাকা ঘুরিয়েছেন বাংলাদেশের অসংখ্য ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বানিজ্য এলাকা হচ্ছে ঢাকা।আর শহরের প্রতিটা মার্কেটই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। দেশের সকল জেলার সর্বস্তরের মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসকল মার্কেটর উপর নির্ভরশীল।
ঢাকার কোন মার্কেট কোথায় অবস্থিত – মার্কেট পরিচিতি
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক এলাকা ঢাকা।দেশ বিদেশের ব্যবসা বানিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বেশিরভাগই ঢাকা শহরকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে।তাইতো এদেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় মার্কেট গুলোর সবই এই রাজধানীতে অবস্থিত।
ধনী শিল্পপতি থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সবারই কমবেশি লেনদেন থাকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এসব মার্কেটে। শুধু ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যেই নয় বরং মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কেনা কাটা করতে হাজার হাজার ক্রেতা প্রতিদিন চলে আসে ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে। বিশেষ বিশেষ উৎসবে ঢাকা সহ ঢাকার বাইরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়ে মুখরিত হয়ে থাকে ঢাকা নগরীর সব শপিংমল গুলো।
আজকের আয়োজনে থাকছে রাজধানীর বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেটের পরিচিতি এবং মার্কেটগুলো সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিস্তারিত তথ্য।
৬ .গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট
আধুনিক জীবনযাপনের নিত্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রযুক্তির বৃহৎ মার্কেট গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট।এই মার্কেটটি স্টেডিয়াম ইলেকট্রনিক মার্কেট হিসেবেও পরিচিত।
যে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য ক্রয়ের একমাত্র নির্ভরযোগ্য মার্কেট এটি।বাংলাদেশের সবথেকে বড় ইলেকট্রনিক পণ্যের মার্কেট বলে অভিহিত করা হয় এই মার্কেটকে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সুন্দর ও সহয করতে বর্তমানে বাজারে রযেছে শত শত ইলেকট্রনিক পণ্য ।
যেমনঃ টিভি,ফ্রিজ,এসি,ওয়াশিং মেশিন, আয়রন, মোবাইল,ইনডাকশন কুকার,সকল প্রকার ওভেন,গ্যাসের চুলা,ফ্যান,ব্লেন্ডার, জুসার,কফি মেকার,রাইস কুকার, মোবাইল সহ আরও নানা ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি । একই পণ্যের জন্য আছে আবার বিভিন্ন ব্রান্ড, যেমনঃ স্যামসাং, নোভা,ওয়ালটন,মিনিস্টার ইত্যাদি। স্টেডিয়াম মার্কেটে আপনি সব কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট পাবেন আলাদা আলাদা ব্রান্ডের। থাকবে হাজার হাজার ডিজাইন ও কালার কম্বিনেশন এর নজরকাড়া পণ্য যা আপনার প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি ঘরের শোভা বর্ধন করবে।
স্টেডিয়াম ইলেকট্রনিক মার্কেট একদম ঠিক গুলিস্তানেই অবস্থিত তাই একে গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট বলা হয়।বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে আসতে চাইলে আপনাকে প্রথমে ঢাকার ব্যাস্ততম এলাকা গুলিস্তানে আসতে হবে।গুলিস্তান নেমে পায়ে হেটেই আপনি যেতে পারবেন এই ইলেকট্রনিক মার্কেটে।গুলিস্তান থেকে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই আপনাকে বলে দিতে পারবে স্টেডিয়াম ইলেকট্রনিক মার্কেটের সঠিক লোকেশন।
বন্ধের দিন সপ্তাহে শুক্রবার একদিন স্টেডিয়াম ইলেকট্রনিক মার্কেট বন্ধ থাকে।বাকি ছয় দিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এই মার্কেটের সকল কার্যক্রম চালু থাকে।
৭ .বাইতুল মোকাররম মার্কেট
স্টেডিয়াম মার্কেটের সাথেই ঢাকার আরেকটি ঐতিহ্যবাহী মার্কেট হলো “বাইতুল মোকাররম মার্কেট “। এখানে সব ধরনের পণ্যসামগ্রী পাওয়া যায় বলে আলাদা ভাবে কোনো পণ্যের জন্য এই মার্কেটকে বিশেষায়িত করা যায় না।সব ধরনের কাপড়, জুয়েলারি,বাচ্চাদের খেলনা,ক্রোকারিজ আইটেম,জুতা,ব্যাগ,হোম ডেকোরেশন আইটেম, ঘরি,বই,ইলেকট্রনিক পণের বিপুল সমাহার রয়েছে এখানে ।
প্রতিদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ক্রেতা সমাগমে ভরপুর থাকে এই মার্কেটেটি।এখানে আছে বেশ কয়েকটি ফুড কোর্ট।
বাংলাদেশের প্রাচীন মার্কট গুলোর মধ্যে বাইতুল মোকাররম মার্কেট একটি।এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ব্যবসায়ীগন যুগ যুগ ধরে কোনে ধরনের সমস্যা ছাড়াই ব্যবসা করে আসছেন।তাই ক্রেতাদরও আস্থার জায়গা এই মার্কেটটি।
এই মার্কেটিও ঢাকার গুলিস্তানে অবস্থিত।তাই এখানে আসতে চাইলে সড়ক,রেল বা নদীপথে গুলিস্তান আসতে হবে।সেখান থেকে রিকশায় বা পায়ে হেটে চলে আসতে পারবেন বাইতুল মোকাররম মার্কেটে।
বন্ধের দিন এই মার্কেটিতেও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে।এছাড়া বাকি দিনগুলোতে সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ক্রেতা সমাগমে ভরপুর থাকে এই মার্কেট।
৮ .শ্যামবাজার
বাংলাদেশের সবথেকে বড় কাঁচা বাজার ও ফলের মার্কেট হলে ঢাকার শ্যামবাজার।এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একনাগারে চলতে থাকে নানা শ্রেণির ব্যবসায়ী ও ক্রেতার সমাগম।
বাংলাদেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ লঞ্চ টার্মিলান ” ঢাকা সদরঘাট এলাকায়” এই বাজারটি অবস্থিত।সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে পূর্ব দিকে ৮ থেকে ১৫ গজ এগোলেই শ্যামবাজারের সীমানা শুরু। এখানে পাওয়া যায় নানা ধরনের ফল, কাঁচা তরি তরকারি, আলু,পেয়াজ,ও বিভিন্ন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার সামগ্রী।
সাধারণত ফজরের আজানের পর থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত সবথেকে বেশি ক্রেতা সমাগম ঘটে এই বাজারে তাছাড়া সকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বেচা কেনা চলতে থাকে শ্যামবাজারে।
এই বাজারের একেক অংশে একেক ধরনের পণ্য পাওয়া যায়।যেমনঃ ১ নং রাস্তা ধরে নদীর পাশের দিকে পাবেন শুধু ফলের দোকান।এসব দোকানে আম,জাম,আপেল,কমলা,আঙুর থেকে শুরু করে সব ধরনের দেশি বিদেশি ফল পাবেন।
ঠিক বিপরীতে পাশেই রয়েছে একসাথে আলু, পেয়াজ এর দোকান।বাজারে ঠিক মাঝামাঝি স্থানে পাওয়া যায় সব ধরনের কাঁচা বাজার ও সবজি।
বন্ধের দিন
ঢাকার বিখ্যাত কাঁচা বাজার “শ্যামবাজার” এর কোনো ছুটির দিন নেই।সপ্তাহে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই বাজারে চলতে থাকে ক্রেতা বিক্রেতার বানিজ্য।
৯. নীলক্ষেত বই মার্কেট
বাংলাদেশের প্রাচীনতম সবথেকে বড় বই মার্কেট হলো ঢাকার নীলক্ষেত বই মার্কেট। বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তের শিক্ষার্থী ও বই প্রেমীদের একমাত্র ভরসার জায়গা এই নীলক্ষেত। অনেকের কাছেি নীলক্ষেত ভালোবাসা ও আবেগের যায়গা।বাংলাদেশের কোনো প্রান্তে খুজে না পাওয়া বইও পাওয়া যায় এই নীলক্ষেত বই মার্কেটে।
ঢাকার ব্যস্ততম এই মার্কেটের আশেপাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ সহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।আর এইসব স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সব ধরনের বইয়ের একমাত্র ভরসার স্থান নীলক্ষেত।
নীলক্ষেতে নতুন পুরাতন সব ধরনের বই বিক্রি করা হয়।পাঠ্যপুস্তক, চাকরির পরিক্ষার সব ধরনের বই, সাহিত্য, ইতিহাস, বিজ্ঞান, বিসিএস প্রি পারেশান সহ সব ধরনের বই এখানে পাওয়া যায়। শুধু ঢাকার ছাত্র ছাত্রীই নয় বরং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের আনাগোনা হয় এই বই মার্কেটে।
এখানে বই বিক্রির পাশাপাশি ফটোকপি করা,পোস্টার ও লিফলেট তৈরি,ছাপার কাজ সহ আরও নানা ধরনের সেবা প্রদান করা হয়। বইয়ের দোকানের পাশাপাশি এখানে আছে অনেক খাবারের দোকান।
দেশের বৃহৎ এই বই মার্কেটটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে অবস্থিত।মিরপুর রোড ও ঢাকা নিউ মার্কেটে থেকে এই মার্কেটের অবস্থান পূর্বে।এর উত্তরে রয়েছে এলিফ্যান্ট রোড ও দক্ষিণে আজিমপুর।
বন্ধের দিন ঢাকার ব্যস্ততম গুরুত্বপূর্ণ এই বই মার্কেটটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন – মঙ্গলবার। তাই ঢাকার বাইরে থেকে বই কিনতে আসতে চাইলে অবশ্যই মঙ্গলবার বাদ দিয়ে সপ্তাহের অন্য যে কোনো দিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে চলে আসতে পারেন নীলক্ষেত বই মার্কেটে।
১০. ইস্টার্ন প্লাজা
ঢাকায় অবস্থিত বিলাসবহুল, বহুতল ভবন বিশিষ্ট মনোরম পরিবেশের একটি শপিং কমপ্লেক্স হলো ইস্টার্ন প্লাজা। এখানে আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্য সামগ্রী একই বিল্ডিংয়ের মধ্যে পেয়ে যাবো কোনো ঝামেলা ছাড়াই।ব্যস্ত নগরীর ব্যস্ততম শপিং কমপ্লেক্স ইস্টার্ন প্লাজায় প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতা ভিড় করে তাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্য এক যায়গা থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটার জন্য। ইস্টার্ন প্লাজায় প্রতিটা পণ্যের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা সেক্টর। একেক সেক্টরে একেক শ্রেনির পণ্য ধারাবাহিক ভাবে সুসজ্জিত থাকে।
ইস্টার্ন প্লাজার প্রথম তলায় আপনি দেখতে পাবেন প্রসাধনী সামগ্রী, ক্রোকারিজ আইটেম ও ইলেকট্রনিক আইটেমের দোকান।লিফট ব্যবহার করে সোজা উপরে চলে গেলে,২য় তলায় পাবেন সব ধরনের কাপড়ের দোকান। বিয়ের শাড়ি লেহেঙ্গা থেকে শুরু করা বাড়িতে পড়ার জন্য সুতি সালোয়ার কামিজ পর্যন্ত মেয়েদের যাবতীয় সব ধরনের পোষাক পাবেন আপনি এই ফ্লোরে।পুরুষদের জন্যও আছে জেন্টস পোষাকের শো রুম।
৩য় তলায় গহনা ও সোনা রুপার দোকান।আরও আছে বাচ্চাদের খেলনার আইটেম।৪র্থ তলার পুরোটা জুড়েই জুতার মার্কেট। এখানে দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের ও বিভিন্ন ডিজাইনের লেডিস ও জেন্টস জুতা পাওয়া যায়।৫ম তলায় আছে বৃহত্তর মোবাইল মার্কেট ও ৬ষ্ঠ তলায় মালিক সমিতি অফিস।৭ম ও ৮ম তলায় ডাক্তারের চেম্বার ও চেম্বার অফিস।
সব মিলিয়ে একই ছাদের নিতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা হাতের নাগালে।
লোকেশনঃ দত্ত রোড, হাতিরপুল, ঢাকা।
ফোনঃ ৯৬৬২০০৪
ই-মেইলঃ [email protected]
বন্ধের দিনঃ রবিবারে ইস্টার্ন প্লাজার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এবং বাকি ৬ দিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত শপিংমলের যাবতীয় কার্যক্রম চালু থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজধানীতে দেশ সেরা সকল বড় বড় শপিং কমপ্লেক্স ও মার্কেট গুলো অবস্থিত।তাই প্রতিদিন ঢাকার বাইরে থেকেও অসংখ্য ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতা রাজধানীতে ভিড় জমায় ঢাকার বড় বড় সব মার্কেট থকে তুলনামূলক কম মূল্যে ভালো পণ্য সংগ্রহ করার জন্য।