ঝর্না পছন্দ করে না এমন মানুষ দেখেছেন কখনো? কেউ হইতো ঝর্নার উপরের দিকে যেতে ভয় পায় কেউ ঝর্নার নিচে যেতে ভয় করে কিন্তু অপছন্দ করে কি? আমার মনে হয় না। আসুন সুন্দর কিছু ঝর্নার ছবি ডাউনলোড করা যায় কিনা দেখা যাক!















































ঝর্ণা হলো প্রকৃতির এক অপূর্ব সৌন্দর্য। পাহাড়ের উঁচু থেকে নিচে দিয়ে পানির ধারা প্রবাহিত হয়ে ঝর্ণা তৈরি হয়। ঝর্ণা বিভিন্ন আকার, আকৃতি এবং উচ্চতার হতে পারে কিন্তু বড় আর উচ্য ঝর্না গুলোই বেশি জনপ্রিয় হয়।
ঝর্ণা কিভাবে তৈরি হয় জানেন কি?
- পাহাড়ের ঢাল বৃষ্টির পানি দ্বারা ধুয়ে খোদাই হয়।
- খোদাই করা স্থানে একটি গর্ত তৈরি হয়।
- এই গর্তে পানি জমা হয় এবং ধীরে ধীরে উপরে উঠে।
- পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে পানি ঝর্ণার মুখ দিয়ে নিচে ঝরে পড়ে। আর এটাকেই আমরা ঝর্না বলি
বিশ্বের ০৫ টি সেরা ঝর্না
১। ইগুয়াজু ঝর্না, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের মধ্যে অবস্থিত। ইগুয়াজু ঝর্না ২৭৫ টিরও বেশি পৃথক ঝর্নার একটি বিশাল সংগ্রহ যা আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সীমান্তে অবস্থিত। জলপ্রপাতগুলি ২.৭ মাইল ৪.৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রসারিত এবং ১৯৬ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা।
২। ভিক্টোরিয়া ঝর্না, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে:ভিক্টোরিয়া ঝর্না বিশ্বের বৃহত্তম ঝর্না, যার প্রস্থ ১ মাইলেরও বেশি ১.৬ কিলোমিটার এবং ৩৫৫ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা। এটি জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ের সীমান্তে অবস্থিত।
৩। ইয়োসেমাইট ঝর্না, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: ইয়োসেমাইট ঝর্না ২,৪২৫ ফুট উচ্চতার। এই ঝর্না উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে উঁচু ঝর্নার মধ্যে একটি।
৪। নায়াগ্রা জলপ্রপাত, নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্টারিও, কানাডাতে অবস্থিত।নায়াগ্রা জলপ্রপাত তিনটি জলপ্রপাতের একটি মিলনস্থল যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার সীমান্তে অবস্থিত। এটি সবচেয়ে বিখ্যাত একটি ঝর্না।
আরো দেখুনঃ জাফলং ভ্রমন
বাংলাদেশের কিছু ঝর্ণার পরিচিতি ও ছবি
বাংলাদেশেও কিন্তু কম ঝর্না নাই। চট্টগ্রাম, সিলেট সহ তিন পার্বত্য জেলাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক গুলো ছোট বড় ঝর্না। এই ঝর্না গুলো দেখার ভ্রমন গাইড প্রায় একই রকম তাই আলাদা আলাদা করে সব গুলোতে যাওয়ার উপায় দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
মূলত আপনি যে ঝর্না দেখতে চান সেই ঝর্না যেই জেলাতে অবস্থিত সেই জেলার উপজেলা পর্যন্ত মূল গাড়ি করে কিংবা ছোট গাড়ি করে যেতে পারবেন। এরপর কখনো পায়ে হেটে কখনো নৌকা করে ঝর্না গুলোতে যেতে হবে। সাথে গাইড রাখা ভালো।
আমিয়াখুম ঝর্ণা
আমিয়াখুম ঝর্নাটি বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার থানচি নামক উপজেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তবর্তী স্থানে দুর্গম এলাকার মধ্যে অবস্থিত সুন্দর এই ঝর্না কে বলা হয় বাংলার স্বর্গ। আমিয়াখুম যেতে হলে ঢাকা বা অন্য যেকোন জেলা থেকে বান্দরবন জেলাতে আসতে হবে, সেখান থেকে ছোট গাড়ি বা জিপে করে থানচি উপজেলাতে আসবেন। থানচি এসে লোকাল গাইড হায়ার করবেন এবং সেই গাইড আপনাদের রেমাক্রি, নাফাখুম, জিনাপাড়া, থুইশাপাড়া, এবং দেবোতাপাহাড় পাড়ি দিয়ে নিয়ে যাবে আমিয়াখুম।
হাম হাম ঝর্না
এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা এলাকায় অবস্থিত। প্রায় ১৫০ ফুট উচ্চতার এই ঝর্না অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান।
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
একই সাথে একাধিক ঝর্ণা দেখতে চান? তাহলে চলে যেতে হবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের উপজেলাতে অবস্থিত নাপিত্তাছড়ায়। আপনি একটি ট্রেইল দিয়েই দেখতে পাবেন মিঠাছড়ি, বাঘবিয়ানী, এবং বান্দরখুমসহ বেশ কিছু ঝর্ণা।
শুভলং ঝর্ণা
বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান নিয়ে আলোচনা হবে আর রাঙামাটির নাম আসবে না তা হয়? পাহাড়, লেক, ঝর্না, সেতু নানা রকম সুন্দর স্থানে ভরপুর এই রাঙ্গামাটিতেই অবস্থিত শুভলং ঝর্ণা।
রাঙ্গামাটি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে শুভলং বাজারের পাশে শুভলং ঝর্ণার অবস্থান। ভরা মৌসুমে ১৪০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে জলধারা আছড়ে পড়ে কাপ্তাই এর লেকে।
সুপ্তধারা-সহস্রধারা
এই দুটি ঝর্ণা চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে বাংলাদেশের প্রথম ইকোপার্ক সীতাকুন্ড ইকোপার্কের ভিতরে অবস্থিত। ইকোপার্ক এর মধ্যে অবস্থিত হওয়াতে এই ঝর্না দুটি দেখতে আপনাকে পার্কের টিকিট কাটতে হবে।
আমাদের এই পোস্ট কিন্তু ঝর্নার পরিচিতি কিংবা ভ্রমন গাইডের না। এই পোস্টে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অন্যান্য বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত সব ঝর্নার ছবিও পাবেন। ঝর্নার ছবি নিয়েই আমাদের এই পোস্ট।
ছবি গুলো কি ডাউনলোড করার অনুমতি আছে?
আসলে এই ছবি গুলো আমি নিজেও বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহ করেছি তাই ব্যবহার করার অনুমতি বা বাধা কোনটাই আমি দিতে পারি না। আপনি চাইলে হাই কোয়ালিটি ঝর্নার ছবি ডাউনলোড করতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন Unspash সাইট থেকে। এছাড়াও Pexels সাইটেও অনেক ছবি পাবেন। এসব সাইট থেকে ঝর্নার পিক কিংবা অন্য পিক আপনারা ফ্রি তেই ইউজ করতে পারবেন কোন কপিরাইট এর সমস্যা ছাড়ায়।
যেমন এই পোস্টে আমি Canva থেকে ছবি নিয়ে পোস্ট করছি। ক্যানভা থেকে নেওয়ার কারনে খেয়াল করলে দেখবেন সব ছবির সাইজ একই রকম। এই ছবি গুলো দিয়ে মোবাইলের ওয়ালপেপার হিসাবে হইতো ইউজ করতে পারবেন না তবে কম্পিউটারের ওয়ালপেপার হিসাবে ইউজ করা যেতে পারে।
ঝর্না দেখতে যাওয়ার আগে
অনেকেই ছবি দেখে একটা স্থান সম্পর্কে ধারনা করে বসে থাকে আর সেই ধারনার উপর ভিত্তি করে সেই স্থানে যাওয়ার জন্য উতলা হয়ে পড়ে। এটা ভুল। বেশির ভাগ ছবিই এডিট করে কালার ব্রাইটনেস বাড়ানো যার কারনে বাস্তবের অল্প সবুজ অল্প ঘাস গাছপালাকেও ছবিতে অনেক সুন্দর সবুজ সতেজ আর ঝোপালো দেখায়। বাস্তবে তেমন নাও হতে পারে।
আবার মৌসুমও একটা জরুরী ব্যাপার। ঝর্না দেখার ভরা মৌসুমে না গিয়ে যদি শুকনা মৌসুমে যান আর উথাল পাথাল পানি আশা করেন তাহলে তো হবে না।
ঝর্না ভ্রমনে সতর্কতা
ঝর্না পিছলা হয় আর বাংলাদেশের বিভিন্ন ঝর্না অনেক দুর্গম এলাকাতে অবস্থিত তাই আপনি যদি শারীরিক ভাবে শক্তপক্ত না হোন, হাটতে না পারেন বা পাহাড় বেয়ে উঠা কষ্টকর হয়ে যায় তাহলে হুট করে ঝর্না দেখতে ছুটে না যাওয়ায় ভালো।
টুরিস্ট গ্রুপের বেশির ভাগ মেম্বার যুবক বয়সের হয় আর তাদের উদোম তাদের সাহস বাড়িয়ে দেয় কিন্তু বাস্তবতা না বুঝে সাহস দেখানো ভালো না তার নিউজ আমরা নানা সময়ে পেয়ে থাকি। ঝরনার একদম উপরে আপনাকে যেতেই হবে এমন কোন কথা নেই। অনেকেই ঝর্না দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফিরে। এটা আমাদের কারো কাম্য না।
পানিতে যাবেন তাই আগে থেকে মোবাইল সহ ইলেকট্রনিক অন্যান্য গেজেটের জন্য প্রটেকশন সাথে নিয়ে যাবেন। পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখবেন।
গাইড সিলেক্টে সতর্ক থাকবেন এবং গাইডের কথা ফলো করার চেষ্টা করবেন।