বিভিন্ন রকমের খেজুর ও তাদের উপকারিতা, কোন খেজুরের দাম কত? আজওয়া, মরিয়ম, সুক্কার, মাবরুম

খেজুর একটি সুমিষ্ট, পুষ্টিগুণে ভরপুর ছোট আকৃতির ফল। প্রাচীন যুগ থেকে বিশ্বের কোনো কোনো অঞ্চলে এই ফলটি প্রধান খাবার হিসেবেও বিবেচিত হয়ে আসছে। ইসলাম ধর্মের সম্মানিত মহামানব প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর প্রিয় খাবারের তালিকায় খেজুরের বিশেষ স্থান ছিল। বিশ্বের সব দেশেই কমবেশি খেজুর উৎপাদন হয়। তবে সৌদি আরব, ইরান, মিশর, আলজেরিয়া সহ বেশ কিছু দেশ খেজুর উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।

স্বাদ, বৈশিষ্ট্য ও গুনগুন মান বিবেচনায় খেজুরের মধ্যে আছে নানা বৈচিত্র্য। পৃথিবী জুড়ে ৩০০০ প্রজাতির খেজুর রয়েছে। বাংলাদেশের বাজারে ১০০ টিরও বেশি প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়।

প্রতিদিনের ক্যালরির চাহিদা পূরণে খেজুর একটি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচিত। সুমিষ্ট ফল হওয়ায় একে চিনির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।চলুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বের জনপ্রিয় কয়েকটি খেজুরের প্রজাতি সম্পর্কে। আরও জানতে পারবেন বিভিন্ন প্রজাতির খেজুরের উপকারিতা, দাম ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত।

১. আজওয়া খেজুর

বিশ্বের সবথেকে দামি ও জনপ্রিয় খেজুর হলো আজওয়া। সৌদি আরবের মদিনা শহর এই খেজুর উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এর প্রিয় খাবার ছিল আজওয়া খেজুর। এতে আছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ও ক্যালোরি যা আমাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

আজওয়া খেজুরের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এটি দেখতে কুচকুচে কালো। খেজুরের ভেতরটা নরম এবং খেতে খুব সুস্বাদু। খেজুরের চামড়ার ওপরে কিছুটা সাদা দাগ দেখতে পাওয়া যাবে।

আসল আজওয়া খেজুরের বোটা গোলাপি রঙের হয় এবং এর মাথার দিকে সোনালী রঙের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। এসকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করলে অন্যান্য খেজুরের থেকে আজওয়া খেজুর আলাদা করা যায়।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

  • আজওয়া খেজুরে ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা শরীরের শক্তির যোগান দেয়।
  • এতে থাকা ভিটামিন এ, বি, সি এবং কে শরীরের পুষ্টির যোগান দেয় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও আয়রন দাঁত ও হাড়ের গঠন নিশ্চিত করে ও ক্ষয় রোধ করে।
  • এটি রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা ঠিক রাখে। ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমতে থাকে।
  • খেজুরে থাকা প্রয়োজনীয় ফাইবার লিভার ও পাকস্থলীর সকল সমস্যার সমাধান করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

আজওয়া খেজুরের দাম

আমদানিকারক ও সংগ্রহের স্থান অনুযায়ী এক কেজি আজওয়া খেজুরের দাম ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

  • আরব/ আফ্রিকার বিভিন্ন খেজুর কিনুন আমাদের অনলাইন শপ দেশীয় বাজার থেকে।

২. মরিয়ম খেজুর

শুকনো খেজুরের মধ্যে সবথেকে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর খেজুর হলো মরিয়ম খেজুর। সাধারণত ইফতারে বাংলাদেশে মরিয়ম খেজুরের চাহিদা প্রচুর। ইরানে ব্যাপকভাবে মরিয়ম খেজুরের চাষ করা হয়। এছাড়া পাকিস্তান, ইরাক, আলজেরিয়া এবং মিশরেও বানিজ্যিক ভাবে মরিয়ম খেজুর চাষ হয়। তবে মদিনায় উৎপাদিত মরিয়ম খেজুর অন্যান্য খেজুরের থেকে স্বতন্ত্র।

মরিয়ম খেজুর চেনার উপায়

মরিয়ম খেজুর সাধারণত লম্বাটে আকৃতির এবং কিছুটা শক্ত এবং শুকনো হয়। খেজুরের রং খয়েরি থেকে কালচে বর্নের হয়। খেজুরের উপরিভাগ কোঁচকানো থাকে এবং কোঁচকানো অংশের উপরটা কালচে বর্ণ ধারণ করে।

মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা :

  1. ১০০ গ্রাম মরিয়ম খেজুরে ২৮২ মিলিগ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়। ফলে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  2. মরিয়ম খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন আছে যা রক্তশূণ্যতা দূর করতে সহায়তা করা।
  3. এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠন নিশ্চিত করে এবং মানবদেহকে শক্তিশালী করে।
  4. ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫ এবং বি৬ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও দৃষ্টি শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করে।
  5. ইফতারে নিয়মিত মরিয়ম খেজুর খেলে এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে।
  6. এটি ফুসফুসের সুরক্ষার নিশ্চিত করে এবং মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মরিয়ম খেজুরের দাম:

খেজুরের ধরন, সংগ্রহের স্থান ও সময় ভেদে এক কেজি মরিয়ম খেজুরের দাম ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৩. আম্বার খেজুর

সৌদি আরবে আনবারা নামে পরিচিত মদিনার বৃহত্তম খেজুরের প্রজাতি আম্বার। আম্বার খেজুর শুধুমাত্র সৌদি আরবের মদিনা শহরেই উৎপাদিত হয়। এটি বেশিরভাগ সময়েই চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায়। ডেজার্টের স্বাদ বৃদ্ধি করতে এবং বৈচিত্র্যতা আনতে আম্বার খেজুর ব্যবহার করা হয়।

আম্বার খেজুর চেনার উপায়

আম্বার খেজুর তুলনামূলক বড় এবং কিছুটা চারকোনা আকৃতির হয়। এই খেজুরের চামড়া খুবই পাতলা এবং মিষ্টি হীন হয়। এটি খুবই মোলায়েম এবং মিষ্টি সুগন্ধের অধিকারী। আম্বার খেজুরের রং গাড় বাদামী থেকে কালচে বাদামী রঙের হয়ে থাকে। বৃহৎ আকৃতির খেজুরের পুরোটাই থাকে নরম এবং মাংসল, ফলে খেতেও বেশ সুস্বাদু হয়। এসকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকলে বুঝতে হবে আপনার সংগ্রহে থাকা খেজুরটি আসল আম্বার খেজুর।

আম্বার খেজুরের খাওয়ার উপকারিতা

১. আম্বার খেজুরে থাকা উচ্চ মাত্রার ক্যালরি শরীরের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে কর্মক্ষম রাখে।
২. এতে থাকা প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।
৩. ঠান্ডা বা কাশির সমস্যায় নিয়মিত আম্বার খেজুর খেলে তাড়াতাড়ি উপশম হয়।
৪. এতে থাকা পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতার সঠিক ব্যালেন্স বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. এই খেজুর নিয়মিত খেলে মুখের যাবতীয় যে কোনো সমস্যা সমাধান হয়।

আম্বার খেজুরের দাম :

সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, সময় ও স্থানভেদে আম্বার খেজুরের দাম ১১০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৪. মাবরুম খেজুর

মাবরুম হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম খেজুরের প্রজাতি গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি সৌদি আরবের মদিনায় উৎপাদিত বিশেষ প্রজাতির খেজুর যা চাবানোর সময় চুইংগামের মতো অনুভব হয়। মাবরুম খেজুর খুবই মিষ্টি এবং এতে ক্যারামেল এর স্বাদ পাওয়া যায়। মাবরুম খেজুরের মধ্যে আবার তিনটি প্রজাতি রয়েছে। একটি লাল মাবরুম, একটি অ্যাম্বার মাবরুম এবং আরেকটি হলো ব্লাক মাবরুম। তিনটি প্রজাতির মাবরুমের আবার স্বাদ ও আকৃতিতেও বৈচিত্র্য রয়েছে।

মাবরুম খেজুর চেনার উপায়

লাল মাবরুম খেজুর তুলনামূলক বড় এবং উপরিভাগ শক্ত থাকে৷ এর রঙ হয় চালচে থেকে লাল খয়েরী এবং খেতে অনেকটা মিষ্টি চুইংগাম এর স্বাদ পাওয়া যায়।

অ্যাম্বার খেজুর লাল খেজুরের থেকে কিছুটা বেটে এবং চামড়া মোটামুটি পাতলা। এই খেজুর খাওয়ার সময় অনেকটা বাদামের স্বাদ পাওয়া যায়। অ্যাম্বার খেজুরের একটি হালকা মিষ্টি গন্ধ আছে।

অন্যদিকে কলো মাবরুম খেজুর সাইজে ছোট ও কিছুটা গোলাকৃতির। ক্যারামেল এর স্বাদ পাওয়া যাবে এবং একটা চমৎকার সুগন্ধি আছে। এসকল বৈচিত্র্য বিবেচনা করা আসল মাবরুম খেজুর চেনা যেতে পারে।

মাবরুম খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

  • মাবরুম খেজুর ব্রেইন এর বিকাশে সহায়তা করে। তাই বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টা মাবরুম খেজুর রাখা যেতে পারে।
  • এটি রক্তে থাকা কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ কমায়। পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখে।
  • মাবরুম খেজুরে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যানসারসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগের ঝুকি কমায়।
  • ডায়াবেটিস এর রোগীরা রক্তে সুগারের ব্যালেন্স ঠিক রাখতে চিনি বা গুড়ের পরিবর্তে মাবরুম খেজুর খেতে পারে।
  • মাবরুম খেজুরে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন পেটের সমস্যা দূর করে।

মাবরুম খেজুরের দাম

আমদানী কারক, সরবরাহকারী, স্থান ও সময় ভেদে এক কেজি মাবরুম খেজুরের দাম ১২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৫. সুক্কারি খেজুর

চিনির থেকেও বেশি মিষ্টি স্বাদযুক্ত খেজুর হলো সুক্কারি খেজুর। আরবি ভাষায় সুক্কারি অর্থ মিষ্টি। এই খেজুরের মিষ্টতা অনেক বেশি বলে এর নামকরণ করা হয়েছে সুক্কারি। সৌদি আরবের প্রায় সব জায়গাতেই সুক্কারি খেজুর উৎপাদন করা হয়। বিকেলের নাশতায় বা দুপুরের খাবারের পরে ডেজার্ট আইটেম হিসেবে সাধারণত এই খেজুর খাওয়া হয়। এটা খেতে অনেকটা ক্যান্ডির মতো, তাই বাচ্চাদের মুখরোচক খাবার হিসেবেও সুক্কারি খেজুর বেশ সমাদৃত।

সুক্কারি খেজুর চেনার উপায়

সুক্কারি খেজুর ভেজা অবস্থায় বেশ মোলায়েম এবং মুখে দিলে ক্রিমি টেক্সচার পাওয়া যায়। তবে এটা সাধারণত শুকনো অবস্থায় বাজারজাত করা হয়। শুকনো সুক্কারি খেজুরের ওপরের অংশটা হালকা শক্ত কিন্তু ভেতরের দিকটা মোলায়েম থাকে। তবে সুক্কারি খেজুর চেনার আসল উপায় হলো এর রং। এটি সাধারনত চোখ ধাঁধানো উজ্জ্বল সোনালি রঙের হয়ে থাকে। আকৃতির দিক থেকে এটি কিছুটা গোলাকার ও মাঝারি সাইজের হয়। এসকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে সুক্কারি খেজুর চেনা যায়।

সুক্কারি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা :

১. সুক্কারি খেজুরের উচ্চ মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট থাকে যা আমাদের শরীরে তাৎক্ষণিক কর্মক্ষমতা জোগায়। এর পাশাপাশি শরীরের তাপমাত্রা ও শক্তি বৃদ্ধি করে। এবং সেই সাথে ক্লান্তি দূর করে।
২. আমাদের ত্বক ও চুলের মসৃণতা ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে সুক্কারি খেজুরের উপকারিতা রয়েছে।
৩. এটও রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে মুটিয়ে যাওয়া রোধ করে তার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
৪. নিয়মিত সুক্কারি খেজুর খেলে এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে রোগা হতে সহায়তা করে।
৫. অনিদ্রা ও মাথার প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
৬. অতিরিক্ত তাপমাত্রায় শীরের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং পানির মাত্রা ঠিক রাখে ফলে শরীর ডিহাইড্রেটিং হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
৭. নিয়মিত সুক্কারি খেজুর খেলে মুখের রুচি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি পেটের সমস্যা দূর করে ক্ষুধামন্দা রেগের নিরাময় করে।

সুক্কারি খেজুরের দাম:

বিক্রেতা, স্থান ও সময়ভেদে এক কেজি সুক্কারি খেজুরের দাম ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৬. কালমি খেজুর

সৌদি আরবে উৎপাদিত আরেকটি সুস্বাদু খেজুর হলো কালমি খেজুর। বাংলাদেশের বাজারে কালমি খেজুরের বেশ চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসে কালমি খেজুরের চাহিদা থাকে সবার শীর্ষে। সৌদি আরবের মদিনায় উৎপাদিত কালমি খেজুর সবথেকে উৎকৃষ্ট মানের হয়। সৌদি আরবে এই খেজুর সাফাওয়ি নামে পরিচিত হলেও অন্যান্য প্রায় সকল দেশে এটি কালমি খেজুর নামেই পরিচিত। ইফতারে নাশতা হিসে এই খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ডেজার্ট আইটেমে বৈচিত্র্যতা আনতে ও খাবারকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে কালমি খেজুর ব্যবহার করা হয়।

কালমি খেজুর চেনার উপায়

কালমি খেজুর অনেকটা মরিয়ম খেজুরের মতো দেখতে। কালমি খেজুরগুলি গাঢ় বাদামী থেকে লাল খয়েরী রঙের হয়ে থাকে। দেখতে কিছুটা লম্বাটে এই খেজুরের ভেতরটা খুব মোলায়েম এবং মাংসল। শুকনো এবং নরম দুই ধরনের খেজুরই বাজারে পাওয়া যায়। কালমি খেজুরের স্বাদ কিছুটা বাদাম ও ক্যারামেল এর টেক্সচার যুক্ত এবং খুব মিষ্টি ও সফট। এই সকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে কালমি খেজুর চিনে নিতে হবে।

কালমি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা :

১. সারাদিন রোজা রেখে কালমি খেজুর খেলে এটি শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালরির চাহিদা পূরণ করবে।
২. কালমি খেজুর শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং দেহকে সতেজতা প্রদান করে।
৩. কালমি খেজুরে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে সহজেই কোনো রোগ শরীরে আক্রমণ করতে পারে না।
৪. এতে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখে। রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
৫. এছাড়াও পেটের যে কোনো সমস্যা সমাধান করে হজমে সহায়তা করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

কালমি খেজুরের দাম:

বাংলাদেশের বাজারে ১ কেজি কালমি খেজুরের দাম সাধারণত ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ভালো মানের খেজুর চেনার উপায়

যে কোনো জাতের খেজুরের মধ্যেই ভালো খারাপ বৈচিত্র্য রয়েছে। খুব ভালো জাতের খেজুরও কোয়ালিটির দিক থেকে খারাপ হতে পারে। সঠিক মানের খেজুর বাছাই করতে না পারলে খেজুরের স্বাদ, গুনগত মান আশানুরূপ হয় না। তাই খেজুর কেনার সময় কিছু বিষয় মাথায় রেখে, ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে খেজুর কেনা উচিত। ভালো মানের খেজুর চেনার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. ভালো মানের খেজুরের উপরিভাগ পরিষ্কার এবং চকচকে থাকবে। চামড়া কিছুটা কোঁচকানো ও শুকনো থাকবে। কোনো ধরনের চিনির দানা বা আঠালো মিষ্টি ভাব থাকলে ধরে নিতে হবে এতে ভেজাল রয়েছে।

২. ভালো মানের খেজুরের সবগুলো একই টেক্সচারের হবে। একটির থেকে আরেকটির স্বাদে কোনো তারতম্য থাকবে না।

৩. খেজুরের আশেপাশে পিঁপড়া ও মাছির উপস্থিতি লক্ষ্য করে বুঝতে পারবেন এতে কোনো অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে কিনা। খেজুরে এক্সট্রা কোনো চিনি বা গুড় ব্যবহার করলে এতে পিঁপড়ার আক্রমণ ঘটবে। খেজুরের প্রাকৃতিক মিষ্টতা পিঁপড়াকে আকর্ষণ করে না।

৪. ভালো মানের খেজুরের এক প্রজাতির সাথে অন্য কোনো প্রজাতির খেজুর মিক্সড করা থাকবে না। এবং সবগুলো খেজুরের সাইজ মোটামুটি একই রকম থাকবে।

খেজুর খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল। শরীরের সুস্থতা ও সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি ভালো মানের খেজুর বাছাই করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রজাতি ভেদে স্বাদের ও রঙের বৈচিত্র্য থাকলেও গুনগত মানের দিক থেকে সকল প্রজাতির খেজুরই প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ।

Scroll to Top