১.শ্রীনগর
কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর এ পুরো শহর দেখার মত একটা সুন্দর জায়গা। এখানে আপনি যা যা দেখতে পাবেন নাগিন লেক,মোগল গার্ডেন, পাহাড়ের চূড়ায় তুষার কনা, টিউলিপ গার্ডেন, হযরত মসজিদ।
২.পেহেলগাম
এটি হিমালয়ের মধ্যে অবস্থিত একটি শহর। এখানে আপনি জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে দেখতে পাবেন আপেল বাগান। পেহেলগাম সবচেয়ে সুন্দর জায়গা গুলো হলো কানিমার্গ, লিদার নদী,অরু ভ্যালি,কাশ্মীর ভ্যালি পয়েন্ট, চান্দেরওয়ারী,ধাবয়ান,বেতাব ভ্যালি।শ্রীনগর থেকে পেহেলগাম যেতে হলে আপনাকে অনন্তনাগ হয়ে যেতে হবে। শ্রীনগর থেকে পেহেলগাম প্রায় ৯০ কি মি ২-২.৩০ ঘন্টা সময় লাগে যেতে।শ্রীনগর থেকে অনন্তনাগ যেতে গাড়ি ভাড়া ২৫০ টাকা লাগতে পারে। অনন্তনাগ থেকে পেহেলগাম যেতে গাড়ি ভাড়া লাগে ২৫০ টাকা।
৩.সোনমার্গ
সোনমার্গে সবুজ উপত্যকা এবং ঝরনা রয়েছে। সোনমার্গ সোনার তৃণভূমি নাম ও পরিচিত। এখানে রয়েছে হিমবাহ, সিন্ধু নদী।সোনমার্গ সাধারণত শীতকালে বন্ধ থাকে। কারণ প্রচুর ঘন তুষার পাতে যাতায়াতের সমস্যা হয়। শ্রীনগর থেকে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে কাঙ্গন পর্যন্ত। শ্রীনগর থেকে কাঙ্গন পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া ১৫০ টাকা হতে পারে। কাঙ্গন থেকে সোনমার্গ পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া ১০০ টাকার মতো। শ্রীনগর থেকে সোনমার্গ মোটামুটি ৪০-৪২ কি মি মতো।
৪.গুলমার্গ
গুলমার্গ সারা বছর পাহাড়ে বড় আচ্ছাদিতে থাকে। শ্রীনগর থেকে গুলমার্গ যেতে সময় লাগে ১-১.৩০ মিনিট যা ৫২-৫৫ কি মি পথ।শ্রীনগর থেকে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে টেনমার্গ। শ্রীনগর থেকে টেনমার্গ গাড়ি ভাটা যেতে পারে ২০০ টাকার মতো। টেনমার্গ থেকে গুলমার্গ যেতে ১০০ টাকার মতো খরচ পড়বে।
৫.ডাললেক
কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর অবস্থিত ডাললেক।এটি হৃদ হাউসবোট এবং ভাসমান বাজারের জন্য পরিচিত। কাশ্মীরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরতে যদি কয়েকজন মিলে যান তবে একটা গাড়ি রিজার্ভ নেওয়া ভালো। কারণ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে সন্ধ্যার পরে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে তখন আপনার ঘুরতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
কাশ্মীরের কিছু ছবি







কাশ্মীর কোথায় থাকবেন হোটেলের খরচ কত:
১.যারা একেবারে কম দামে হোটেলে থাকতে চান, ডাল লেকের সামনে, ১৪০০-২০০০ হাজার টাকার মধ্যে দুই থেকে তিন জন থাকার উপযোগী রুম পেয়ে যাবেন।
২.যদি আপনি এক থেকে দুই তারকা হোটেল গুলোতে থাকতে চান ১৫০০-২৫০০ টাকার মধ্যে রুম পাবেন।
৩.যদি আপনি তিন তারকা মানের হোটেলে থাকতে চান ৩৫০০-৮০০০ হাজার টাকার মধ্যে রুম পেয়ে যাবেন।
৪.যদি আপনি চার তারকা মানের হোটেলে থাকতে চান ৮০০০-১৫০০০ হাজার টাকার মধ্যে রুম পেয়ে যাবেন।
৫.যদি আপনি ৫ তারকা হোটেলে থাকতে চান ১৫০০০-৭০০০০ হাজার টাকার মধ্যে রুম পেয়ে যাবেন।
৬.যারা হাউজ বোডে থাকতে চান তাদের খরচ পড়বে ৫০০০-৩০০০০ হাজার টাকার মতো। হাউস বোড গুলো সুন্দর কারুকার্যে সাজানো। যারা কারুকার্য পছন্দ করেন, তারা এই হাউজ বোডে থাকতে পারেন।
কাশ্মীরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সৃজনে রুমের ভাড়া কম বেশি হয়ে থাকে।

কাশ্মীর কি খাবেন খরচ কত :
১.কাশ্মীরের মধ্যে খাওয়া-দাওয়া দাম একেবারেই কম। আপনি মোটামুটি ১৫০-৩০০ টকার মধ্যে কাবাব খেতে পারেন। কাশ্মীরের কাবাব সাধারণত অনেক মজার এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে। কাবাব এর সাথে আপনি রুটি খেতে পারেন।
২.বিরিয়ানি খেতে পারেন ২০০-৩০০ টাকার মধ্যে ভালো বিরিয়ানি খেতে পারবেন
৩.কাশ্মীরে প্রচুর পরিমাণ অর্গানিক ফল ফ্রুট পাওয়া যায় আপনি পল ফ্রুট খেতে পারেন। ৪.চা পাওয়া যায় প্রতি কাপ চায়ের দাম ১৫-২০ টাকা হবে।
কাশ্মীর যেতে পাসপোর্ট এবং ভিসা সংক্রান্ত
বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীর যেতে প্রথমে আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসা প্রয়োজন। ভিসার জন্য আপনাকে আগে আবেদন করতে হবে। আপনি আপনার নিকটস্থ ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করুন। সাধারণত ভিসার জন্য আবেদন করলে মৌসুম বেদে ৫-১০-২১ দিন অথবা ১ মাস ও লেগে যতে পারে।আনুমানিক ভিসার জন্য ৮০০-১০০০ হাজার টাকার মত খরচ হয়।
ভিসা নিতে অবশ্যই আপনি কোন পথ দিয়ে যাবেন যা আপনার পাসপোর্ট এবং ভারতীয় ভিসায় উল্লেখ করে নিবেন। ভিসার তিন রকমের হয়,১.সিঙ্গেল এন্টি, ২.ডাবল এন্টি,৩.মাল্টিপল এন্টি।সব ক্ষেত্রে খরচটা একই। এটা নির্ভর করে আপনি ভারতে কয়বার ঢুকতে পারবেন এবং কয়বার বের হয়ে আসতে পারবেন।
যদি আপনি মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে করে যেতে চান তবে সেক্ষেত্রে আপনার ভিসাই রেলগেদে এই লাইনটা চাপানো থাকবে।যদি সড়কপথে বাসে করে যেতে চান সাধারণত হরিদাসপুর ছাপানো থাকবে। তার পাশাপাশি আপনি যদি বিমান করে যেতে চান সেক্ষেত্রে বাই Air এটি ছাপানো থাকবে।
কাশ্মীর কিভাবে যাবেন খরচ এবং যাতায়াত সংক্রান্ত :
১.ঢাকা থেকে কলকাতা :
১.বাংলাদেশ থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন অনেকগুলো বাস যায়। সাধারণত বাস গুলো রাতের বেলায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যায় এবং সকাল বেলা কলকাতা পৌঁছায়।বাস ঢাকা থেকে কলকাতা পৌঁছাতে সাধারণত ১০-১৫ ঘন্টা সময় লাগে। যদি আপনি নন এসি বাসে করে যেতে চান তবে প্রতি টিকেট পড়তে পারে ১০০০-১৩০০ টাকার মতো। যদি এসি বাসে যেতে চান টিকেট পড়তে পারে ২০০০-২৫০০ টাকার মতো। বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে -৫৫০ টাকার মতো কর দিতে হবে।
২.যদি ট্রেনে করে যেতে চান: ঢাকা থেকে সাপ্তাহে ৩-৪ দিন মৈত্রী এক্সপ্রেস যাই কলকাতা উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন সময় তাদের সময়সূচী পাল্টায়। আপনি তাদের ওয়েবসাইটে সময়সূচী দেখে নিবেন। মৈত্রী এক্সপ্রেসে যেতে হলে সর্বনিম্ন খরচ পাড়তে পারে -২৭০০ টাকার মত এবং সর্বোচ্চ খরচ পড়তে পারে -৪০০০ হাজার টাকার মতো। এসি এবং নন এসি দুটিই আছে। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে ট্রেন ছাড়ে সকাল -৮.০০ টায় এবং কলকাতা পৌঁছায় ৫.০০ টায়।
৩.ঢাকা থেকে সরাসরি কাশ্মীর কোন বিমান যায় না। ঢাকা থেকে বিমান দিল্লি এয়ারপোর্টে নামাবে। ঢাকা থেকে দিল্লি সাধারণত বিমান টিকেট ২০০০০-২৫০০০ হাজার মতো হতে পারে। দিল্লি থেকে আবার বিমানে করে শ্রীনগর এয়ারপোর্টে যাবেন। সেক্ষেত্রে দিল্লি থেকে শ্রীনগর বিমানের টিকিটের দাম হতে পারে -১০০০০-১২০০০ হাজার টাকার মতো। দিল্লি থেকে শ্রীনগর যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি দুপুরের সময়টাকে বেছে নিলে বরফে আচ্ছাদিত পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাবেন।
কলকাতা থেকে জম্মু :
কলকাতা থেকে জম্মু আপনি ট্রেন করে যেতে পারেন। কলকাতা থেকে তিনটি ট্রেন যাই জম্মু পর্যন্ত। ট্রেনগুলো হল জম্মুতায়ী এক্সপ্রেস, হিমচাফার এক্সপ্রেস, হিমগিরি এক্সপ্রেস। জম্মুতায়ী এক্সপ্রেস সাধারণত প্রতিদিন ১১.৪৫ মিনিটে ছাড়ে।ঢাকা থেকে সকাল বেলা যারা বাসে করে কলকাতা পৌঁছায়।তাদের একটা সুযোগ আছে এই ট্রেনটাকে ধরার। জম্মুতায়ী এক্সপ্রেস জম্মু গিয়ে পৌঁছাতে সাধারণত ৪৫ ঘন্টার মতো সময় লাগে।
হামচাফার এক্সপ্রেস সাধারণত জম্মু গিয়ে পৌঁছাতে ৩৩ ঘন্টার মতো সময় লাগে। হিমগিরি এক্সপ্রেস সাপ্তাহে তিন দিন যায়। এগুলোর সময়সূচী অবশ্যই ভারতীয় রেলওয়ে ওয়েবসাইট IRTC দেখে নিবেন। কলিতা কলকাতা থেকে জম্মুতায়ী এক্সপ্রেসে প্রতি টিকেট পড়তে পারে ৯০০-১০০০ হাজারের মতো। যদি এসি বা ফাস্ট ক্লাস তুমি ঘরে যেতে চান তবে টিকিট হতে পারে ২৫০০-৩০০০ হাজার টাকার মতো।
জম্মু থেকে শ্রীনগর
জম্মু থেকে শ্রীনগর পাই ২৫০ কিলোমিটারের মতো পথ।জম্মু থেকে আপনি বাসে করে শ্রীনগর যেতে পারেন।বাসের প্রতি টিকেট পড়তে পারে ১২০০-১৫০০ টাকার মতো। তাছাড়া জম্মু থেকে কাশ্মীর সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন কিছু বাস রয়েছে নাম হলো J K S R T C বাস। যদি আপনি এই বাসে করে যেতে চান খরচ পড়বে টিকিট প্রতি ৫০০-১৫০০ টাকার মতো।
এসি নন এসি দুটি আছে। অন্যভাবে যাওয়া যায়, আপনি যেকোন একটা লোকাল বাসে করে বানিহার পর্যন্ত চলে আসবেন। বাসের টিকিট পড়বে ২৫০-৪০০ টাকা।বানিহার থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত ট্রেন আছে। টিকিট পড়বে ৫০-৬০ টাকার মতো।