বন্দর নগরী চট্টগ্রাম বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের মধ্যে বেশ আকর্ষণীয় একটি স্থান। পর্যটকদের আতিথ্য দেয়ার জন্য এখানে রয়েছে বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল। আজকের আয়োজনে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো চট্টগ্রামের এমনি একটি চার তারকা হোটেল নিয়ে। হোটেলের নাম ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল। তো চলুন পাঠক! চলে যাই মূল আলোচনায় :
আজকের প্রবন্ধটি আমরা সাজিয়ে নিয়েছি কয়েকটি ধাপে, যথা:
- ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেলের লোকেশন
- ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল এর রুম ভাড়া
- বুকিং করার উপায়
- ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল এর সুযোগ-সুবিধা
- যোগাযোগের ঠিকানা
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেলের লোকেশন এবং যোগাযোগের ঠিকানা
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল চট্টগ্রাম শহরের নিজাম রোডে অবস্থিত। এই হোটেলটি শাহ আমানত ইন্টারন্যশনাল বিমানবন্দর থেকে ৪৬ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। এখান থেকে ফয়েজ লেক ঘুরতে যেতে ২২ মিনিট সময় লাগে। পতেঙ্গা বিচে যেতে লাগে প্রায় ৪১ মিনিট।
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেলটির পূর্ণ ঠিকানা নিচে দেয়া হলো:
রোড#০১, প্লট#০২, ও.আর. নিজাম রোড, চট্টগ্রাম।
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল এর রুম ভাড়া
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেলে বিভিন্ন ধরনের রুম রয়েছে। এসব রুমের ভাড়াও এক নয়। সুযোগ, সুবিধা, রুমের অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের উপর নির্ভর করে ভাড়া উঠা-নামা করে।
রুমের ধরন | রুমভেদে ভাড়া |
ক্রাউন স্যুইট | ৬০,০০০ টাকা। |
ভিআইপি স্যুইট | ৫৫,০০০ টাকা। |
ওরিয়েন্টাল স্যুইট | ৫০,০০০ টাকা। |
এক্সিকিউটিভ স্যুইট | ৩৫,০০০ টাকা। |
ক্রাউন টুইন রুম | ২০,০০০ টাকা |
ক্রাউন ডিলাক্স | ১৮,৭৫০ টাকা |
ভিআইপি টুইন রুম | ১৭,৫০০ টাকা |
ভিআইপি ডিলাক্স রুম | ১৬,২০০ টাকা |
প্রিমিয়াম টুইন রুম | ১২,৫০০ টাকা |
প্রিমিয়াম ডিলাক্স রুম | ১২,৫০০ টাকা |
১। ক্রাউন স্যুইট:
বিজনেস ট্রাভেলারদের জন্য পছন্দের তালিকায় প্রথমেই থাকবে ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেলের এই ক্রাউন স্যুইট গুলো। এই স্যুইট গুলো ৪ টি বেড রুম নিয়ে গঠিত যার মধ্যে একটি মাস্টার বেড এবং বাকি তিনটি কাপল রুম। মাস্টার বেডে কিং সাইজ এবং কুইন সাইজের দুইটি বেড আছে৷ এই মাস্টার বেড গুলোতে প্রায় ৫ জন থাকতে পারবেন। বাকি তিনটি রুমে ৩ থেকে ৬ জন থাকতে পারবেন। সব মিলিয়ে ক্রাউন স্যুইট গুলোতে প্রায় ১১ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এই স্যুইটে ৪ টি বেড রুম ছাড়াও আছে লিভিং রুম, যেখানে ৪ জন অতিথি আপ্যায়নের মতো ব্যবস্থা আছে। এই স্যুইটের বারান্দায় কফি টেবিল ও চেয়ার আছে। নান্দনিক এই স্যুইটে থাকতে হলে গুণতে হবে ৬০০০০ টাকা।

২। ভিআইপি স্যুইট:
এই স্যুইটটিও ৪ টি বেড রুম নিয়ে সাজানো। এতে ১ টি মাস্টার বেডরুম এবং বাকি তিনটি সাধারণ বেডরুম। মাস্টার বেডরুমে একটি কুইন সাইজ বেড এবং একটি সিংগেল বেড আছে। বাকি ৩ টি বেডরুমে ১ টি করে কুইন সাইজ বেড আছে যাতে দু’জন করে ৬ জন অনায়াসে থাকতে পারবে। এই ভিআইপি স্যুইট গুলোতে প্রায় ৯ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে৷ এছাড়া ৪ জন অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা সমেত লিভিং রুম আছে। এখানে আরামদায়ক সোফার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কিচেন সামগ্রীও আছে। এসব স্যুইটে থাকার জন্য গুণতে হবে ৫৫,০০০ টাকা।
৩। ওরিয়েন্টাল স্যুইট:
এই স্যুইটটি ৩ টি বেড রুম নিয়ে সজ্জিত যাতে একটি কুইন সাইজ এবং দুইটি টুইন সাইজ বেড রয়েছে। এছাড়া বিলাসবহুল আধুনিক সাজে সাজানো আলাদা লিভিং রুম রয়েছে। এই স্যুইট গুলোতে সর্বমোট ৬ জন অতিথি থাকতে পারবেন। এজন্য গুণতে হবে ৫০,০০০ টাকা।
৪। এক্সিকিউটিভ স্যুইট:
এই স্যুইট গুলো ৩ টি বেড রুম নিয়ে গঠিত যাতে আছে ২ টি কুইন সাইজ এবং ১ টি টুইন সাইজ বেড। এছাড়া বেশ বড়-সড় জায়গা নিয়ে নান্দনিকতার ছোঁয়ায় সাজানো লিভিং রুম আছে। এখানে প্রায় ৬ থেকে ৭ জন অতিথি একসাথে বসে খাওয়া -দাওয়া করতে পারবেন। এছাড়া আছে ছোট্ট একটি বেলকনি যা কফি টেবিল ও চেয়ারে সজ্জিত।
৫। ক্রাউন টুইন রুম:
আধুনিক ও নান্দনিকতায় সজ্জিত এই ক্রাউন টুইন রুম গুলো। এই রুমে দুটি বেড আছে। যাতে প্রায় ৪ জন থাকতে পারবে। এছাড়া রুমের থেকে আলাদা করে লিভিং রুম আছে। সেখানে অতিথিদের বসে গল্প করার জন্য সোফা আছে। রুমে এলইডি টিভি, ক্লোসেট এবং লেখার জন্য রাইটিং টেবিল সেট ও আছে। আপনি যদি এ ধরনের রুমে থাকতে চান তাহলে আপনাকে গুণতে হবে ২০,০০০ টাকা।
৬। ক্রাউন ডিলাক্স:
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেলের এই রুম গুলোতে একটি বেড রয়েছে। রুমে এলইডি টিভি, রাইটিং টেবিলের পাশাপাশি বসার জন্য সিংগেল সোফাও আছে। এছাড়া রুমের সাথেই আলাদা লিভিং রুম আছে যেখানে অতিথিরা বসে খাওয়া দাওয়া করতে পারবেন। ক্রাউন ডিলাক্সের অসাধারণ ইন্টেরিয়র ডিজাইন যে কারো মন কাড়তে বাধ্য। এ ধরনের রুমে থাকতে আপনাকে গুণতে হবে ১৮,৭৫০ টাকা।
৭। ভিআইপি টুইন রুম:
মার্জিত ইন্টেরিয়র ডিজাইনে সাজানো এই ভিআইপি টুইন রুম গুলো। এই রুমগুলোতে দুইটি বেড আছে। যাতে ২ জন ভালোভাবে থাকতে পারবেন। এছাড়া রুমে বসার জন্য আরামদায়ক সোফা এবং একটি সেন্টার টেবিল রয়েছে। অতিথিদের বিনোদনের জন্য এই রুমে এলইডি টিভি আছে যাতে প্রায় ৪৫ টি চ্যানেল দেখা যাবে। এই ধরনের রুমের ভাড়া ১৭,৫০০ টাকা।
৮। ভিআইপি ডিলাক্স রুম:
ওয়েল পার্ক হোটেলের এই ধরনের রুম গুলোর ভাড়া ১৬,২০০ টাকা। এই ভাড়া হোটেলের অফার ভেদে কমতে বা বাড়তে পারে। এই ধরনের রুমে আপনি একটি বড় সাইজের বেড পাবেন। পাশাপাশি আছে আলাদা লিভিং রুম যা রুমের সাথেই। এছাড়া, এলইডি টিভি এবং লেখার জন্য রাইটিং টেবিল সেট আছে।
৯। প্রিমিয়াম টুইন রুম:
প্রিমিয়াম টুইন রুম গুলোও বেশ প্রিমিয়াম ধরনের। মার্জিত ইন্টেরিয়র ডিজাইনের পাশাপাশি রুমের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা এবং ফ্যাসিলিটির সাথে রুম ভাড়া একদমই সাদৃশ্যপূর্ন। এই রুম গুলোতে দুইটি বেড, বসার জন্য সোফা, সেন্টার টেবিল, রাইটিং টেবিল সেট রয়েছে। এ ধরনের রুমের ভাড়া মাত্র ১২,৫০০ টাকা।
১০। প্রিমিয়াম ডিলাক্স রুম:
প্রিমিয়াম ডিলাক্স রুম গুলোও বেশ সুন্দর। ১২,৫০০ টাকার এই রুমে আপনি পাবেন একটি বেড যাতে দুই জন অনায়াসে থাকা যাবে। এছাড়া অতিথি বসার জন্য দুইটা আরামদায়ক সোফাও এই প্রিমিয়াম ডিলাক্স রুমে রয়েছে। আপনি লেখালেখি করতে চাইলে সে সুযোগও আছে। লেখার জন্য এই রুমে আছে একটি রাইটিং টেবিল সেট। বিনোদনের জন্য রয়েছে এলইডি টেলিভিশন যাতে প্রায় সব ধরনের চ্যানেল দেখা যাবে।
ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল এর সুযোগ-সুবিধা:
একটি উন্নত মানের হোটেলে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় তার সবই এই হোটেলে একজন পর্যটক পেয়ে থাকবেন। এই হোটেলের সুযোগ সুবিধা গুলো হলো:
- ওয়েলকাম ড্রিংকস
- বাফেট ব্রেকফাস্ট
- এক্সপ্রেস চেক ইন
- ফ্রুট বাস্কেট
- নিউজপেপার পড়ার সুবিধা
- শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
- সার্বক্ষণিক রুম সার্ভিস।
- সেইফ বক্স
- মিনি বার
- এলইডি টিভিতে ৪৫ টি চ্যানেল দেখার সুযোগ
- সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা।
- কোরাল থাই স্পা
- বিজনেস সেন্টার।
- বার্বার শপ
- রিও কফি
- জিম
- ট্রাভেল ডেস্ক।
- এয়ারপোর্ট/বাসস্টপেজ থেকে হোটেলে আসা এবং ফেরত যাওয়া।
- ফ্রি কার পার্কিং
- ঠান্ডা ও গরম পানির ব্যবস্থা
- রুফটপ স্মোকিং জোন।
- যেকোনো শারীরিক অসুবিধায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা।
তো পাঠক! জানলেন তো ওয়েল পার্ক রেসিডেন্স বুটিক হোটেল, চট্রগামের যাবতীয় তথ্য। এবার সিদ্ধান্ত আপনার যে চট্টগ্রাম ঘুরতে এসে কোথায় থাকবেন!