ওমানের দর্শনীয় স্থানের তালিকা এবং ইতিহাস

আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনাতে অবস্থিত একটি উন্নত রাষ্ট্র ওমান। এটি মূলত একটি মরুভূমি দেশ। সরকারিভাবে দেশটির নাম ওমান সালতানাত। ওমান একটি মুসলিম প্রধান দেশ বিধায় দেশটির সংস্কৃতি, শাসনব্যবস্থা, ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডে পুরোপুরি ইসলামিক রীতিনীতির প্রভাব লক্ষ করা যায়।

রাজনৈতিক ভাবে ওমানে রাজতন্ত্র মোতাবেক শাসন পরিচালনা করা হয় এবং ওমানের রাজাকে সুলতান বলে সম্বোধন করা হয়। ওমানের রাজধানীর নাম মাস্কাট এবং এটিই দেশটির বৃহত্তম নগরী বা বসতি। দেশটির মোট আয়তন ৩,০৯,৫০০ বর্গ কিলোমিটার বা ১,১৯,৫০০ বর্গ মাইল। আয়তনের দিক থেকে ওমান বিশ্বের ৭০ তম বৃহত্তম দেশ। ২০১৫ সালের আনুমানিক হিসেব মতে ওমানে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যা ৪২,৯৮,৩২০জন। জনসংখ্যার দিক থেকে দেশটি বিশ্বের ১২৬ তম বৃহত্তম দেশ।

একদমই অনুন্নত ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ওমান বর্তমানে একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধশীল দেশে পরিনত হয়েছে। এর শিল্প, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ সহ অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দিক গুলোর জন্য পুরো বিশ্বের কাছে ওমান একটি পরিচিত দেশ হতে পেরেছে।

ওমানের ভৌগোলিক অবস্থান

ভৌগোলিক গঠনগত দিক থেকে ওমান খুবই বৈচিত্র্যময়। কোথাও শুষ্ক বালুকাময় ভূমি, কোথাও উর্বর সমভূমি আবার কোথাও বা সুউচ্চ পর্বতমালার চূড়া দেখতে পাওয়া যায়। ওমান উপকূল ওমানীয় সাম্রাজ্যের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিল । এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত এই দেশটির বেশ কয়েকটি দেশের সাথে আন্তর্জাতিক ভাবে স্থল ও জল সীমানা রয়েছে।

ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত,সৌদি আরব, আরব সাগর, ওমান উপসাগর এবং পারস্য উপসাগরের সীমানা ঘেঁষে দেশটির অবস্থান। ওমানের উপকূলরেখায় ওমান সাগর এবং আরব সাগরের সীমানা লক্ষ করা যায়। ওমানের দক্ষিণ-পশ্চিমে ইয়েমেন প্রজাতন্ত্র, পশ্চিমে সৌদি আরব রাজ্য এবং উত্তরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে আন্তর্জাতিক স্থল সীমানা রয়েছে।

সৌদি আরবের সাথে দেশটির আন্তর্জাতিক সীমানা ৬৭৬ কিমি বা ৪২০ মাইল,সংযুক্ত আরব আমিরাত এর সাথে ৪১০ কিমি বা ২৫০ মাইল এবং ইয়েমেন এর সাথে ২৮৮ কিমি ১৭৯ বা মাইলের আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা রয়েছে। ওমানের বেশির ভাগ অঞ্চলই শুষ্ক মরুভূমি এবং উত্তরে উর্বর সমভূমি এবং পর্বতমালা দেখতে পাওয়া যায়। মোট ভূখন্ডের প্রায় শতকরা ৮২ ভাগ ভূমি বালি, নুড়ি এবং মরুভূমি দ্বারা গঠিত, শতকরা ১৫ ভাগ পাহাড়ী এলাকা এবং অবশিষ্ট শতকরা ৩ ভাগ উপকূলীয় সমভূমি নিয়ে গঠিত।

ওমানের ইতিহাস

ইতিহাসবিদ গন মনে করেন ওমানে প্রথম মানব বসতি গড়ে ওঠার ইতিহাস প্রায় ১০০,০০০ বছরের বছরের পুরোনো। ওমানে ইসলামের আগমনের আগে ও পরে অনেক বিদেশি শাসকদের দ্বারা দেশটি পরিচালিত হয়েছে। বিভিন্ন আরব গোত্র, পর্তুগাল, এবং ব্রিটেন সহ আরও বিভিন্ন খোটখাট শাসক গোষ্ঠী এই দেশে তাদের রাজত্ব বিস্তার করেছে।

১৬ শতকে মাস্কাট পর্তুগাল ওমান দখল করে নেয় এবং তারা ১৬৫০ সাল পর্যন্ত এখানে রাজত্ব করে।মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে এই ভূখন্ড দখল করে তবে কেউই স্থায়ী হতে পারেনি। ১৮ শতকের সময় আহমদ ইবনে সাইদ পারস্য আক্রমণকারীদের তাড়িয়ে দেশটির নির্বাচিত নেতা হন এবং নিজস্ব শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যা আজও ওমানকে শাসন করছে।

ওমানের জাতীয় পতাকা

সাদা, লাল এবং সবুজ রঙের সমন্বয়ে ওমানের জাতীয় পতাকার নকশা প্রনয়ণ করা হয়েছে। তিনটি আনুভূমিক ডোরা এবং একটি উলম্ব ডোরা নিয়ে পতাকাটি গঠিত। বামদিকের উলম্ব লাল ডোরার উপরিভাগে রয়েছে ওমানের জাতীয় প্রতীক বা চিহ্নের ছবি। জাতীয় প্রতিক টিতে দুটি ক্রস করা তলোয়ার, একটি ছোরা এবং একটি বেল্ট এর ছবি রয়েছে। ওমানের বর্তমান জাতীয় পতাকার সর্বশেষ নকশা প্রনয়ণ করা হয় ১৯৭০ সালের ১৭ ই ডিসেম্বর। পতাকাটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ২:১ তবে কখনও কখনও ৭:৪ অথবা ৯:৫ অনুপাতের পতাকাও ব্যবহৃত হয়।

ওমানের প্রচলিত ভাষা

ওমানের একমাত্র সরকারি ভাষা আরবি। শুদ্ধ আরবি ভাষা সকল প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে ব্যবহার করা হয়। তবে পারিবারিক কথোপকথন ও ঘরোয়া পরিবেশে সাধারণত আঞ্চলিক কথ্য আরবি ভাষা ব্যবহৃত হয়। আরবি ভাষার বেশ কয়েকটি প্রচলিত রূপ ওমানে দেখতে পাওয়া যায়।

এর মধ্যে উপসাগরীয় আরবি ও ধোফারি আরবি উল্লেখযোগ্য। সৌদি আরব অঞ্চলের কিছু জনগোষ্ঠী আছে এই দেশে যারা পুরোপুরি শুদ্ধ আরবি ভাষায় কথা বলে। ওমানের জনসংখ্যার বেশ কিছু অংশই অভিবাসী জনগোষ্ঠী। অভিবাসী জনগোষ্ঠীর লোকজন সাধারণত তাদের দেশীয় ভাষায় কথোপকথন করে।

অনেক অভিবাসীদের মধ্যে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারও দেখতে পাওয়া যায়। অভিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষার দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় ওমানের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪.৯ ভাগ লোক দক্ষিণ বেলুচি ভাষায় কথা বলে, শতকরা ৪.৭ ভাগ লোক মালায়ালাম ভাষায় কথা বলে এবং শতকরা ৪.২ ভাগ লোক বাংলা ভাষায় কথা বলে। এছাড়াও অন্যান্য ভাষাভাষী লোকজনও রয়েছে এই দেশে।

ওমানের অর্থনীতি

ওমানের অর্থনীতি মূলত তেল নির্ভর। বিশ্বের তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ওমান অন্যতম। দেশীয় শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেও দেশটি বিভিন্ন অভিবাসীদের কাজের বৃহৎ ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৬৪ সালে ওমানের বুকে তেলের সন্ধান মেলার পর থেকেই দেশটির অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে থাকে। বর্তমানে ওমানের নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান বেশ উন্নত এবং সমৃদ্ধ।

তেল ছাড়াও প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য খনিজ সম্পদেরও কিছু মজুদ রয়েছে দেশটিতে। উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য সম্পদের ব্যপক উন্নতি লক্ষ করা যায়। কৃষি, পরিবহন, পর্যটন, চিকিৎসা ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও দেশটির অর্থনৈতিক খাত অনেকটা নির্ভরশীল। ওমানের নাগরিকদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সকল খাতে ওমানের নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ওমান সরকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে যা ওমানাইজেশন নামে পরিচিত।

১৯৯৯ সালে এই ওমানাইজেশন প্রকল্প গ্রহনের মাধ্যমে ওমানের নাগরিকদের কর্ম ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলতে কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিজস্ব নাগরিকদের অবস্থান দৃড় হয়েছে এবং দেশটির জিডিপি কয়েক বছরে তুলনামূলক ভাবে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব বাজারে ওমান উন্নত ও অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ একটি দেশ হিসেবে পরিচিত।

ওমানের আবহাওয়া ও জলবায়ু

ওমানের বেশিরভাগ অঞ্চলেই শুষ্ক মরুভূমির আবহাওয়া লক্ষ করা যায়। এখানে বছরের পুরো সময়েই দিনে বেশ প্রখর তাপমাত্রা এবং রাতে ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে। বাৎসরিক বৃষ্টিপাত খুব সামান্য বললেই চলে। গরমের মৌসুমে শুষ্ক আবহাওয়ার সাথে প্রায়ই বালির ঝড় হতে দেখা যায়।

বাৎসরিক গড় তাপমাত্রা হিসেব করলে দেখা যায় গ্রীষ্মের সময়ে তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর আশেপাশে থাকে এবং শীতকালে এটি ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৭৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর মধ্যে চলে আসে। তবে দেশটি কিন্তু ঋতুবৈচিত্রেও কোনো অংশে কম না। সারা বছর জুড়ে ওমানে চারটি ঋতুর আনাগোনা লক্ষ করা যায়- এগুলো হলো : বসন্ত, গ্রীষ্ম, শরৎ এবং শীতকাল।

বসন্তে মোটামুটি গরম অনুভব হয় এবং কিছুটা গ্রীষ্মের বৈশিষ্ট্য এই ঋতুতে বিদ্যমান। বসন্তের সময় দিনের বেলা গড় তাপমাত্রা থাকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসবা ৮৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং রাতে গড় তাপমাত্রা থাকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। গ্রীষ্মের সময় গড় তাপমাত্রা থাকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কাছাকাছি এবং আবহাওয়া পুরোপুরি শুষ্ক থাকে।

শরৎ ঋতুতে তাপমাত্রা মাঝাড়ি ধাচের হয় এবং এই সময় থেকে শুরু করে শীতের সময় পর্যন্ত প্রায়ই হালকা ও মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়। অবস্থানের উপর নির্ভর করে বার্ষিক ২৫ মিমি থেকে থেকে ৫০০ মিমি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়।

শীতকালে বাতাসের আদ্রতা তুলনামূলক অনেক বেশি থাকে এবং আবহাওয়া বেশ শীতল থাকে। শীতকালে গড় তাপমাত্রা দিনের বেলা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কম হতে দেখা যায়।

ওমানের সংস্কৃতি

দৈনন্দিন জীবন এবং সামাজিক রীতিনীতির দিক থেকে ওমানকে একটি উপজাতীয় সমাজ বলা চলে, যদিও উপজাতীয় প্রভাব ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। ওমানের নাগরিকরা প্রধানত ইবাদি মুসলিম সম্প্রদায়ের সামাজিক রীতিনীতি পালন করে।

ওমানের নাগরিকদের মধ্যে সামাজিকতা অনেক বেশি পরিলক্ষিত হয়। আনন্দ, আমেজ, খেলাধুলা, উৎসব অনুষ্ঠানের দিকে এই দেশের বাসিন্দাদের ঝোক অনেক বেশি। বছরে বেশ কয়েকবার জাতীয় ভাবে উট ও ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এছাড়াও বালি সার্ফিং, ওয়াটারস্কিং, ফুটবল, রাগবি সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক খেলাধুলা বেশ জনপ্রিয়। খাওয়া দাওয়ার সময়েও ওমানের বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ সামাজিকতা লক্ষ করা যায়। পরিবার পরিজন ও আত্নীয় স্বজন নিয়ে একত্রে খাওয়াদাওয়ার বিষয়টি তারা বেশ উপভোগ করে।

ওমানের নাগরিকদের খাদ্যাভ্যাস

ওমানি রন্ধনপ্রণালী খালিজি রন্ধনপ্রণালীর একটি অংশ। আরব, পাকিস্তানি, ইরানী, ভারতীয়, এশীয়, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এবং আফ্রিকান রন্ধনপ্রণালীর এক বৈচিত্রময় সংমিশ্রণ ঘটেছে ওমানের রন্ধনপ্রণালীতে। ওমানের প্রচলিত খাদ্য অন্যান্য আরব দেশগুলোর থেকে একটু ব্যতিক্রমধর্মী কেননা এই অঞ্চলের রান্নায় মসলা তুলনামূলক কম ব্যবহার করা হয় এবং খাবার গরম গরম পরিবেশন করার রীতি একদমই কম।

বেশিরভাগ খাবার মুরগি, মাছ এবং ভেড়ার মাংসের পাশাপাশি ভাত ও সবজির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। ওমানের বাসিন্দারা দুপুরের খাবারকেই বেশি প্রাধান্য দেয় এবং স্পেশাল আইটেম গুলো দুপুরে মেনুতেই রাখা হয়। অন্যদিকে সকাল এবং রাতের খাবার হয় হালকা এবং সাদাসিধে। ওমানের জনপ্রিয় ও প্রচলিত খিছু খাবার হলো হারিস, কাবুলি, কাহওয়া, কাবাব, মাচবুস, শুওয়া, সাখানা ইত্যাদি। চা ওমানের প্রধান পানীয়। এছাড়াও পানীয় হিসেবে কফি, লাবান, ওমানি কাহওয়া, সফট ড্রিংকস বেশ জনপ্রিয়।

ওমানের দর্শনীয় স্থান

প্লান যদি হয় বিদেশ ভ্রমনের তবে ওমান ঘুরে আসলে মন্দ হয় না। একজন পর্যটককে সন্তুষ্ট করার জন্য সব ধরনের পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে এই দেশে। নজরকাড়া সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে সুউচ্চ পাহাড়, পাহাড়ি ঝর্ণা, ঐতিহাসিক স্থাপত্য, চমৎকার মসজিদ, জাদুঘর ও বিভিন্ন পার্ক সহ আরও অনেক মন ভোলানো পর্যটন কেন্দ্রের দেখা মিলবে এই দেশে। এমানের জনপ্রিয় বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে তুলে ধরা হলো :

ওমানের মরুভূমি

১. মাস্কাট

ওমান ঘুরতে গেলে সর্বপ্রথম ভ্রমন প্লান করা উচিত ওমানের রাজধানী শহর মাস্কাটে। শহরটি তার প্রাচীন সৌন্দর্যকে এখনও ধরে রাখতে পেরেছে। একই শহরে একসাথে বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখার সুযোগ হবে এখানে। পান্না নীল সমুদ্র সৈকত এবং রোমাঞ্চকর জলক্রীড়া সহ বিভিন্ন জাদুঘর ও পার্ক রয়েছে এখানে।

২. সালালাহ শহর

ওমানের অন্যতম পর্যটন নগরী সালালাহ শহর। বর্ষার সময় পাহাড়ি প্রকৃতি ও ঋর্নার এক অনবদ্য সৌন্দর্যে মেতে ওঠে শহরটি। এখানে আছে বেশ ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য, প্রাচীন মসজিদ ও বিশাল সংগ্রহের জাদুঘর। আরও উপভোগ করা যাবে সমুদ্র সৈকতের চমৎকার দৃশ্য।

৩. নিজওয়া পর্যটন নগরী

ওমানের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন এলাকা নিজওয়া পর্যটন নগরী। এটি একটি বৈচিত্র্যময় শহর যেখানে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং কৃষি আকর্ষণ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের বাগান ও গাছপালায় ঘেরা এই শহরটিতে পর্যবেক্ষন করার জন্য আছে নিজওয়া দুর্গ, জেবেল আখদার সহ আরও অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র।

৪. ওয়াদি দরবাত

ওয়াদি দরবাত হল একটি চমৎকার সবুজ উপত্যকা যার আশেপাশে অনেক পাহাড় ও ছোট ছোট পাহাড়ী গুহা রয়েছে। পর্যটকেরা এই গুহায় উঠতে পারে। প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য ওয়াদি দরবাত একটি সুন্দর নৈসর্গিক স্থান। চারপাশের মনোরম পাহাড়ের সাথে উপভোগ করতে পারবেন একটি জলপ্রপাতের নৈসর্গিক সৌন্দর্য। এখানে খাওয়াদাওয়ার জন্য ছোট ছোট বেশ কিছু স্টলও রয়েছে।

৫. সোহার পর্যটন এলাকা

ওমানের চাকচিক্যময় শহর দেখতে চাইলে চলে যেতে হবে সোহার পর্যটন এড়িয়ায়। এখানে পাবেন বিশাল মল এবং আকাশচুম্বী ভবন। এছাড়াও এখানে উপভোগ করতে পারবেন চমৎকার মরুভূমির সৌন্দর্য, ঘোড়ার দৌড় দেখা, উটের পিঠে ওঠা এবং ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের কেনাকাটা করা।

৬. মুসান্ডাম

মুসান্ডাম একটি ওমানি উপদ্বীপ যা রুক্ষ পাহাড় এবং ফিরোজা জলাশয়ের দিয়ে বেষ্টিত । পৃথিবীর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম জলপথ – হরমুজ প্রণালী এই শহরেই অবস্থিত।

৭. বাহলা শহর

ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষিত ওমানের প্রথম শহর বাহলা। এটি মূলত একটি ছোট মরুদ্যান বসতি যেখানে ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক ঘরবাড়ি, দুর্গ প্রাচীর, একটি বাজার, ফালাজ প্রণালী এবং একটি মসজিদ রয়েছে। তবে শহরটি এতো বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে বাহলা দুর্গের জন্য।

৮. খাসাব শহর

ওমানের একটি পুরোনো শহর খাসাব। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়ি ঘরই বেশ পুরোনো এবং পরিত্যক্ত তবে এখানকার বসবাসকারী বাসিন্দারা খুবই আন্তরিক। খাসাব শহরে উপভোগ করার জন্য আছে জেবেল হারিম পর্বত, বালুকাময় সৈকত, সুন্দর প্রবাল এবং পর্তুগিজ দুর্গের বাড়ি সহ আরও অনেক পর্যটন কেন্দ্র।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যময় পর্যটন কেন্দ্র, প্রাচীন নিদর্শন ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন দেশ ওমান, যার অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারনে আজ বিশ্বের কাছে একটি স্বনামধন্য দেশ হিসেবে পরিচিত। ওমানের নাগরিকগন নিজেদের গর্বিত মনে করেন এমন একটি দেশের বাসিন্দা হতে পেরে।

Scroll to Top