ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম ২০২৫
বর্তমানে ২০২৪ সালে ই-পাসপোর্ট চেক করা খুবই সহজ। এবং ঘরে বসেই অনলাইনে আপনি চেক করে নিতে পারবেন আপনার ই-পাসপোর্ট এর বর্তমান স্ট্যাটাস। অর্থ ই-পাসপোর্ট আবেদন করার পর এর সর্বশেষ অবস্থা চেক করে নিতে পারবেন।
আপনি যদি অনলাইনে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে থাকেন। তাহলে আপনার ই-পাসপোর্ট টির বর্তমান অবস্থা জানতে আমাদের নিচের দেয়া ধাপ গুলো অবলম্বন করুন। চলুন ২০২৪ সালে ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া যাক।
ই-পাসপোর্ট চেক করার জন্য যা প্রয়োজন
২০২৪ সালে আপনার ই-পাসপোর্টটি চেক করতে হলে প্রথমেই আপনার যা প্রয়োজন:
- একটা স্ট্রং ইন্টারনেট কানেকশন ডিভাইস (যেমন: কম্পিউটার, ল্যাপটপ, বা স্মার্ট ফোন)।
- এরপর আপনার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি অথবা অ্যাপ্লিকেশন আইডি এবং ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার।
- সাথে আপনার জন্ম তারিখ।
এই সমস্ত জিনিসগুলো থাকলেই আপনার ই-পাসপোর্ট ২০২৪ সালে চেক করা যাবে।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার নিয়ম ২০২৫
পাসপোর্ট আবেদন অনলাইনে সম্পন্ন করার পরে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ জমা দিতে হয়। সেখানকার সব কাজ সম্পন্ন করার পরে একটা ডেলিভারি স্লিপ দিয়ে থাকে, যেটা দিয়ে মূলত পাসপোর্টটি রিসিভ করতে হয়। এই স্লিপের একদম উপরে থাকে একটা এপ্লিকেশন আইডি। এই আইডি ও জন্ম তারিখ ব্যাবহার করে ই-পাসপোর্ট চেক করা যায়।

ই পাসপোর্ট চেক করার জন্য:
- প্রথমেই গুগল থেকে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট চেক এর করার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- এরপর সেখানে ডেলিভারি স্লিপে থাকা এপ্লিকেশন আইডি বসাতে হবে।
- জন্ম তারিখ ইনপুট দিন
- তারপর ক্যাপচা কোড দিয়ে আই অ্যাম হিউম্যান এ টিক দিন
- সব শেষে চেক বাটনে ক্লিক করুন
এবার আপনার ই-পাসপোর্ট এর স্ট্যাটাস আপডেট এসে পড়বে।

এস এম এস এর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার নিয়ম ২০২৪
এছাড়াও মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমেও চেক করা যাবে।
এসএমএস এ চেক করতে হলে ডেলিভারি স্লিপে থাকা বারকোড এর নিচে একটা এপ্লিকেশন আইডি থাকে সেই নাম্বার লিখে 16445 এ পাঠিয়ে দিলে চলে আসবে ই-পাসপোর্ট এর স্ট্যাটাস।
যেমন (EPP XXX-XXXXXXXXXXXXX ) লিখে সেন্ড করতে হবে 16445 এই নাম্বারে।
পাসপোর্ট এর কোন স্ট্যাটাস এ কি বুঝায়?
পাসপোর্ট চেক করার ক্ষেত্রে অনেক গুলো ধাপ থাকে। আর সেগুলো একদম শুরু থেকে শেষ অব্দি ধাপে ধাপে আগাতে থাকে। আর একেকটা ধাপে সম্পন্ন হয় একেকটা প্রসেসিং , এরপর নেক্সট স্টেপে যায়। যেমন :-

১. Submitted :-
সাবমিটেড এর অর্থ হচ্ছে আপনার ই-পাসপোর্ট এর আবেদন টি পাসপোর্ট অফিসে সঠিক ভাবে জমা হয়েছে। এটা প্রথম ধাপ । মূলত আবেদন করার পরে সেটা পাসপোর্ট অফিসে যদি গ্রহণ করে তাহলেই এটা সাবমিটেড দেখায়।
২. Appointment scheduled:-
অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিডিউল্ড এর মানে হলো , পাসপোর্ট অফিস থেকে, পাসপোর্ট আবেদন ফরম ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো জমা দেয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারন করা হয়েছে। আপনি উক্ত সময়ে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদন পত্র ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো জমা দিয়ে আসবেন।
৩. Enrollment in process:-
এনরোলমেন্ট ইন প্রসেস , এটার মানে হচ্ছে আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট এর আবেদন পত্র ও যেসব ডকুমেন্টস গুলো জমা দিয়েছেন সেগুলো প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে। এই ধাপে সকল ইনফরমেশন ও ডকুমেন্টস গুলোকে স্ক্যান করে পাসপোর্ট অফিসের ডাটাবেজ আপলোড করা হয় । মূলত এটা করতে দুই বা তিন চার দিন লাগে । কিন্তু অনেক সময় এতে সপ্তাহ খানেক ও লাগতে পরে।
৪. Pending SB police clearance:-
এটা হচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন এর ধাপ। এই সময় পুলিশ ভেরিফিকেশন করবে আপনার এড্রেস এবং ভেরিফিকেশন এর জন্য তিনি হয়তো আপনার বাসায় আসবেন ভিজিটে নয়তো আপনাকেও থানায় ভিজিটে যেতে বলতে পারে। সেক্ষেত্রে পুলিশ ও কিছু ডকুমেন্টস চাইবে আপনার কাছে। সেগুলো তাদের কাছে জমা দিতে হবে। এই ধাপটিতে এক সপ্তাহ বা এর থেকে কম সময় লাগতে পারে। তবে এলাকাভেদে একটু বেশি সময়ও লাগতে পরে।
৫. Pending final approval:-
পেন্ডিং ফাইনাল অ্যাপ্রুভাল এর মানে হচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন টা সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এবং পুলিশ আপনার ডকুমেন্টস সঠিক ভাবে ভেরিফিকেশন করেছে আর এখন সেটা নেক্সট স্টেপ এর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন এটা পাসপোর্ট অফিসের ডিরেক্টর বা সহকারী পরিচালকের এপ্রুভাল এর অপেক্ষায় আছে। এটা সম্পন্ন হয় যায় দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই।
৬. Approved:-
অ্যাপ্রুভড এর মানে হচ্ছে পাসপোর্ট অফিসের ডিরেক্টর বা সহকারী পরিচালক এটাকে অ্যাপ্রুভ করেছে। পাসপোর্ট এর জন্য সব ডকুমেন্টস ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সঠিক থাকলে এটা পাসপোর্ট অফিসের ডিরেক্টর বা সহকারী পরিচালক অ্যাপ্রুভড করে থাকে।
৭. Pending in print queue:-
মূলত এই সময়ে পাসপোর্টে প্রিন্টিং এর কাজ শুরু হয়। এজন্য অনেক সময় এই ধাপটি পার হতে বেশি সময় নিয়ে থাকে। এই ধাপে পাসপোর্টটি প্রিন্টিং এর জন্য প্রিন্টিং প্রেস এ পাঠানো হয়।
৮. Passport shipped:-
পাসপোর্ট শীপড এর মানে হলো পাসপোর্টটি সফলভাবে প্রিন্টিং এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এবং প্রিন্টিং কাজ শেষ করার পরে এটা পাসপোর্ট অফিসে সিপড করা হয়েছে। এর মানে আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উদ্দেশ্যে পাসপোর্টটিকে পাঠানো হয়েছে।
৯. Passport ready for issuance:-
পাসপোর্টটি শিপড করার পরের স্টেপ হচ্ছে এটা। এর মানে হলো পাসপোর্টটি সফলভাবে আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এসে পৌঁছে গেছে। এবং এটা এখন ইস্যু করার জন্য সম্পন্ন ভাবে প্রস্তুত। আপনি এখন পাসপোর্ট এর ডেলিভারি স্লিপটিকে সাথে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাবেন, আর এই ডেলিভারি স্লিপ দেখাবেন। এরপর পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনাকে আপনার পাসপোর্টটি ডেলিভারি করা হবে। এছাড়াও এটা যদি এটা আপনার সেকেন্ড টাইম পাসপোর্ট হয়, মানে আপনি যদি আপনার পাসপোর্টটি রিইস্যু এর জন্য আবেদন করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার পুরাতন পাসপোর্টকে ও সাথে করে নিয়ে যাবেন। কেননা আপনার পুরাতন পাসপোর্টটি পাসপোর্ট অফিস জমা রেখে দিবে।
১০. Passport issued:-
পাসপোর্ট ইস্যুড হচ্ছে একদম শেষ ধাপ । এর মানে হলে যে আপনার পাসপোর্টটি সফলভাবে আপনাকে ডেলিভারি করা হয়ে গেছে। মূলত আবেদনকারীর হাতে সফলভাবে পাসপোর্টটি হ্যান্ড ওভার করার পরেই এটা কমপ্লিট দেখায়।
এভাবে খুব সহজেই ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম অনুসরণ করে জেনে নিতে পারবেন। এখন নিশ্চয়ই আপনি বাড়িতে বসে নিজে নিজেই আপনার ই-পাসপোর্ট টির বর্তমান অবস্থা জেনে নিতে পারবেন।